ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তব
সাদাকালো নিউজ ডেস্ক
বর্তমান বিশ্বের অন্যতম আইকনিক নেত্রী শেখ হাসিনা। ক্ষমতায় থাকা বিশ্বের দীর্ঘমেয়াদি নারীনেত্রীও এখন তিনি। ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী, ব্রিটেনের মার্গারেট থ্যাচার, জার্মানির অ্যাঙ্গেলা মের্কেল এবং শ্রীলঙ্কার চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গাকেও টপকে গেছেন শেখ হাসিনা। তিনি টানা তৃতীয় ও মোট চতুর্থবারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
১৯৯৬ সালের ২৩ জুন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসে। ক্ষমতায় এসেই ভারতের সঙ্গে ৩০ বছর মেয়াদী গঙ্গা নদীর পানি চুক্তি করেন শেখ হাসিনা। দেশের পার্বত্য অঞ্চলের শান্তি ফিরিয়ে আনতে করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি। যমুনা নদীর উপর বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণ এবং খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ং-সম্পূর্ণতা অর্জন ছিল শেখ হাসিনার বড় অর্জন।
দেশে শেখ হাসিনায় প্রথম কৃষকদের জন্য বিভিন্ন কল্যাণমূলক কর্মসূচি এবং ভূমিহীন, দুস্থ মানুষের জন্য সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচি চালু করেন। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে দুস্থ নারী ও বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, বয়স্কদের জন্য শান্তি নিবাস, আশ্রয়হীনদের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্প এবং একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প।
শেখ হাসিনার প্রথম মেয়াদে বিচার ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর কাজ শুরু করেন। বাতিল করেন ইনডেমনিটি আইন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কার্যক্রম শুরু, রাজনৈতিক হত্যা, বঙ্গবন্ধু ও তার সপরিবার, কারাগারে জাতীয় চার নেতা হত্যাসহ সকল হত্যার বিচার কার্যক্রম শুরু শেখ হাসিনার হাত ধরেই।
ক্ষমতার দ্বিতীয় মেয়াদে আরও উজ্জ্বল শেখ হাসিনা। ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি তিনি বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দ্বিতীয়বারের মতো শপথ নেন। এবার শেখ হাসিনার স্বপ্ন দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলা। শুরু করেন স্বপ্ন পূরণের যাত্রা। বিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা বাড়িয়ে করেন ১৩ হাজার ২৬০ মেগাওয়াট। তাঁর হাতে দেশের গড় প্রবৃদ্ধি অর্জন হয় ৬ শতাংশেরও বেশি।
এ মেয়াদে কোটি মানুষকে মধ্যবিত্তে উন্নীতকরণের পাশাপাশি ভারত ও মায়ানমারের সঙ্গে সামুদ্রিক জলসীমা বিরোধের নিষ্পত্তি করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রতিটি ইউনিয়নে ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন এবং মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থীর বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণে পান সাফল্য। কৃষকদের জন্য কৃষিকার্ড এবং ১০ টাকায় ব্যাংক হিসাব খোলার ব্যবস্থা করে দেন শেখ হাসিনা। বিনা জামানতে বর্গাচাষীদের জন্য ঋণ প্রদানেরও ব্যবস্থা করেন তিনি।
শেখ হাসিনা চিকিৎসাসেবার জন্য সারাদেশে প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার কমুউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করেন। স্থাপন করেন ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রও। দারিদ্র্যের হার ২০০৬ সালের ৩৮ দশমিক ৪ থেকে কমে ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে হয় ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ।
শেখ হাসিনা প্রতিবার ক্ষমতায় এসেছেন, আর দেশ এগিয়েছে দুর্বার গতিতে। ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিজয়ের পর আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করে। ভারতের সাথে স্থল সীমানা বিরোধ নিষ্পত্তি করেন শেখ হাসিনা। এতে দুই দেশের মধ্যে ৬৮ বছরের পুরোনো সীমানা বিরোধের অবসান হয়।
ক্ষমতার তৃতীয় মেয়াদে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৬০২ ইউএস ডলারে উন্নীত করেন শেখ হাসিনা। তাঁর নেতৃত্বে দারিদ্র্যের হার ২২ দশমিক ৪ শতাংশে নেমে আসে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছাড়ায় ৩২ বিলিয়ন ডলার। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু তৈরির মতো সাহসী পদক্ষেপ নেন শেখ হাসিনা।
সবশেষ ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট নিরঙ্কুশ জয় পায়। ৭ জানুয়ারি ২০১৯ শেখ হাসিনা চতুর্থবারের মত দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন।
চলতি মেয়াদে স্বাস্থ্য, কৃষি, বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুত্তি, বিদ্যুৎ খাত, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীসহ বিভিন্ন খাতের উন্নয়নে শেখ হাসিনা পেয়েছেন অভুতপূর্ব সাফল্য। শিক্ষাখাতে বিনামূল্যে বই বিতরণ, মেধাবৃত্তি ও উপবৃত্তি প্রদান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ, শিক্ষাখাতে বাজেট বরাদ্দ, শিক্ষক নিয়োগ ও মর্যাদা বৃদ্ধি, নতুন বিদ্যালয় স্থাপন, কওমি মাদ্রাসার শিক্ষা, দারিদ্রপীড়িত এলাকায় স্কুল ফিডিং কর্মসূচি, সাক্ষরতার হার বৃদ্ধি, প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট ফান্ড, কম্পিউটার ল্যাব ও মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপন এবং সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কাজ করছেন।
নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের দিকে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন হচ্ছে। দেশের প্রথম স্যাটেলাইট ‘বঙ্গবন্ধু-১’ মহাকাশে। মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে সহ আরো অনেক মেগা প্রকল্পের কাজ চলছে। দেশের আইটি খাতে শেখ হাসিনা তৈরি করেছেন নতুন সম্ভাবনা।
এক যুগ আগেও শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশের ধারণা নিয়ে উপহাস করতেন অনেকে। আজ তা বাস্তব। আজকের ডিজিটাল বাংলাদেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই এগিয়ে যাচ্ছে। এই ডিজিটাল বাংলাদেশের ধারণা শেখ হাসিনায় দিয়েছেন। তিনিই দেশকে নিয়ে যাচ্ছেন নতুন উচ্চতায়।