বাবা ডাক শোনার আগেই সন্তান হারালেন ইরফান!
সাদাকালো নিউজ
অনাগত যমজ দুই সন্তানের অপেক্ষায় ছিলেন ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা ইরফান সাজ্জাদ। কিন্তু সন্তানের মুখ দেখার সেই স্বপ্ন পূর হয়নি তার। অভিনেতার স্ত্রী শারমিন সাজ্জাদ অসুস্থ হয়ে পড়ায় গর্ভেই দুই সন্তান পরপারে পাড়ি দেন। গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অভিনেতা নিজেই।
ইরফান সাজ্জাদ জানান, দীর্ঘ দেড় বছর ধরে অসুস্থ ছিলেন তার স্ত্রী। চেন্নাইয়ের অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিলো। এর মধ্যেই স্ত্রীর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর জানতে পারেন তিনি। গেল ৫ মে চেন্নাই থেকে ঢাকার ফ্লাইটের টিকিটও কনফার্ম করা ছিল তার। কিন্তু হঠাৎ করে সেদিন তার স্ত্রী বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েন।
অভিনেতা জানান, এদিন স্ত্রীকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। করানো হয় বড় সার্জারি। কিন্তু চিকিৎসক তাদের ৬ মাসের অনাগত সন্তানদের পৃথিবীর আলো দেখাতে পারেননি। তার প্রথমবার বাবা হওয়ার আনন্দ ভেস্তে যায় হারানোর ব্যথায়।
ইরফান জানান, তার স্ত্রীর শারীরিক অবস্থা অনেক খারাপ ছিলো। চিকিৎসকদের হাতে গর্ভের সন্তানদের বাঁচিয়ে রাখার উপায় ছিলো না। তার স্ত্রী এখনও সুস্থ নন। দেশের সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন তিনি। গেল ২৩ মে ফেসবুকে একটি ছবিও পোস্ট করেছেন ইরফান। ছবির ক্যাপশনে লিখেছেন, তাদের নাম রেখেছিলাম ‘প্রিয়’ আর ‘মায়া’। তারা আল্লাহর বেশি প্রিয় হয়ে গেল।
ইরফানের পরিবারের কেউ অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত নন। তবে প্রাথমিকে পড়ার সময় থেকে অভিনয়ে আগ্রহী হয়ে উঠেছিলেন তিনি। কিন্তু সেই সময়টাতে পড়াশোনার চাপ থাকায় অভিনয় নিয়ে ভাবার সময় পাননি। ২০০৫ সালে এইচএসসি পরীক্ষা শেষে আবারও অভিনয়ের ভূত চাপে ইরফানের মাথায়।
২০১৩ সালে ‘ফেয়ার এন্ড হ্যান্ডসাম দ্য আলটিমেট’ প্রতিযোগীতার মাধ্যমে শোবিজে যাত্রা শুরু করেন ইরফান। এই কম্পিটিশনে সবাইকে টপকে প্রথম হন তিনি। এটিকে নিজের জীবনের সেরা অর্জন বলে মনে করেন এই অভিনেতা। বিজয়ী হওয়ার পর নাটক, বিজ্ঞাপন ও সিনেমায় কাজ করে শোবিজে নিজের শক্ত অবস্থান তৈরি করেন ইরফান সাজ্জাদ।
ইরফান অভিনীতি প্রথম টেলিফিল্ম ‘ভালোবাসার গল্পের শেষাংশ’। এরপর একে একে ‘সরীসৃপ’, ‘কখনো ফিরে এসো না’, ‘চট্টলা এক্সপ্রেস’ ও ‘মেড ইন চিটাগাং’সহ বেশকিছু নাটকে অভিনয় করেন তিনি।
বড় পর্দাও দেখা গেছে ইরফানকে। ‘ইউটার্ন’, ‘মন জানে না মনের ঠিকানা’ ও ‘ভালোবাসা এমনি হয়’ ছবিতে অভিনয় করেছেন এই অভিনেতা। বর্তমানে মানসম্মত কাজের মাধ্যমে সবার মাঝে বেঁচে থাকতে চান ইরফান সাজ্জাদ।