প্রধানমন্ত্রীর আগমন ঘিরে যশোরে উৎসবের আমেজ
সাদাকালো নিউজ

যশোর শহরজুড়ে শ্রমিক, রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের ব্যস্ততা। কেউ দেয়াল রং করতে ব্যস্ত, কেউ-বা পলেস্তরা করছে। এ ছাড়াও কেউ কেউ সড়ক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা আর রং করতে ব্যস্ত। একইসঙ্গে তৈরি করা হচ্ছে তোরণ, অভ্যর্থনা গেট। সব তোড়জোড় চলছে আগামী ২৪ নভেম্বরের দিনটিকে ঘিরে। ওই দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যশোরে আসছেন। তিনি যশোর শামসুল হুদা স্টেডিয়ামে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় অংশ নেবেন।
সোমবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে এ দৃশ্য দেখা যায়।
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে ব্যাপক প্রস্তুতি ও কর্মযজ্ঞ চলছে আওয়ামী লীগে দলীয় ফোরাম এবং প্রশাসনে। ইতোমধ্যে শামস-উল হুদা স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছে নৌকার আদলে মঞ্চ তৈরির কাজ। ইতোমধ্যে সাজানো হয়েছে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তর। যশোর শহরের মুজিব সড়ক, সিভিল কোর্টের মোড়, শহীদ সড়ক, দড়াটানা মোড়, পুলিশ লাইনস, বিমানবন্দর সড়কসহ বিভিন্ন সড়ক ঝকঝকে হয়েছে।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জানান, যশোরে স্মরণকালের বৃহৎ জনসমাবেশ ঘটাতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জনসভায় পাঁচ লাখ মানুষের সমাগমের টার্গেট রয়েছে। সমাবেশস্থলে জায়গা বাড়াতে স্টেডিয়ামের উত্তর পাশের গ্যালারি ভেঙে ডা. আবদুর রাজ্জাক মিউনিসিপ্যাল কলেজ মাঠের সঙ্গে একীভূত করা হয়েছে। জনসভায় খুলনা বিভাগের ১০ জেলা ও আশপাশের জেলার নেতাকর্মীরা অংশ নেবেন। ফলে নিরাপত্তা জোরদার, ট্রাফিক ব্যবস্থা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ চলছে।
জেলা আওয়ামী লীগ ও ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জনসভা সফল করতে আওয়ামী লীগের আটটি উপকমিটির নেতারা নানামুখী কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে ইতোমধ্যে বিশাল এই গণজমায়েতের জন্য বাস, প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস মিলিয়ে পাঁচ হাজার যানবাহন আসা ও পার্কিংয়ের জন্য স্থান নির্ধারণ করেছে ট্রাফিক বিভাগ। চার হাজার গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য ১০টি স্পট নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে এমপি-মন্ত্রীদের জন্য চারটি স্পট, অন্য ভিআইপিদের জন্য একটি স্পট ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদের বাস, প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস পার্কিংয়ের জন্য আর পাঁচটি পার্কিং এলাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রয়োজনে সীমানা বাড়ানো হবে। জনসভার দিন শহরে কোনো যানবাহন প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। শহরের অংশ হেঁটে সবাইকে চলাচল করতে হবে। অবশ্য হেঁটে চলাচলে একটি রোডম্যাপ করা হচ্ছে।
এদিকে যশোরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভায় প্রথমবারের মতো আসছে দেশের ঐতিহ্যবাহী কলরেডি কোম্পানির মাইক। জনসভার ভাষণ প্রচারে গোটা শহরজুড়ে থাকবে এই কোম্পানির প্রায় ৩০০ মাইক। ১৯৭১ সালের ঐতিহাসিক ৭ মার্চে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে কোম্পানির মাইকে ভাষণ দিয়ে জাতিকে জাগ্রত করেছিলেন, সেই কলরেডির মাইকে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। নিখুঁত সাউন্ড সিস্টেম পেতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে আওয়ামী লীগ নেতারা জানিয়েছেন।
যশোর শহরের বাসিন্দা রিকশাচালকরা জানান, যশোর শহরের সবখানে সাজানো হচ্ছে। রাস্তা-ঘাট পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। সুন্দর লাগছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আসবেন বলে সাজানো হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী যদি প্রতিবছর একবার যশোরে আসেন। তাহলে সবসময় এমন থাকবে যশোর শহর।
যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন জানান, জনসভার ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সেই অনুযায়ী দ্রুত গতিতে কাজ চলছে। স্টেডিয়ামে নৌকার আদলে মঞ্চ তৈরির কাজ চলছে। নির্ধারিত সময়ের আগেই মঞ্চ তৈরির কাজ শেষ হবে।
যশোর ট্রাফিক বিভাগের পুলিশ পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান জানান, আগামী ২৪ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর জনসভার দিন ট্রাফিক পুলিশ অন্যান্য দিনের তুলনায় বেশি তৎপর থাকবে। শহরে যাতে কোনো যানজটের সৃষ্টি না হয়, এ বিষয়ে লক্ষ্য রাখা হবে। এ ছাড়াও বাইরের জেলা বা উপজেলা থেকে যেসকল বড় যানবাহন আসবে সেগুলোকে শহরের বাইরে রাখতে বলা হবে। বড় যানবাহন শহরে প্রবেশ করলে যানজটের সৃষ্টি হতে পারে।