চট্টগ্রামে বন্যায় ১৫ জনের মৃত্যু, ক্ষতি ১৩৫ কোটি টাকা
সাদাকালো নিউজ
টানা বর্ষণে সৃষ্ট বন্যায় চট্টগ্রামে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। ধসে পড়েছে শত শত ঘরবাড়ি। ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে অন্তত ১৩৫ কোটি টাকার। জেলা প্রশাসন কার্যালয় সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
গত ১ আগস্ট থেকে চট্টগ্রামে বৃষ্টিপাত শুরু হয়। ৪ আগস্ট নগরী ও জেলায় বন্যা দেখা দেয়। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি অবনতি হতে থাকে। এরমধ্যে ৭ আগস্ট পর্যন্ত চার দিন টানা জলাবদ্ধতা ছিল নগরীতে। অপরদিকে জেলার ১৫ উপজেলার মধ্যে ১৪টি উপজেলায় এখনও কিছু কিছু এলাকায় বন্যায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে মানুষকে।
চট্টগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. সাইফুল্লাহ মজুমদার জানান, বন্যায় চট্টগ্রাম নগরী ও জেলায় ১৫ জন মারা গেছেন। এরমধ্যে সাতকানিয়ায় ছয়, লোহাগাড়ায় চার, চন্দনাইশে দুই, রাউজানে এক, বাঁশখালীতে এক ও মহানগরীতে একজন মারা গেছেন। প্রাথমিকভাবে বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩৫ কোটি টাকা।
সাতকানিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিল্টন বিশ্বাস বলেন, ‘বন্যায় সাতকানিয়ায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখন পানি নামছে। অনেক মাটির ও সেমিপাকা ঘর ধসে পড়েছে। রাস্তাঘাট, কৃষি, মৎস্য, গবাদিপশুর অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সাতকানিয়ায় এখন পর্যন্ত বন্যায় মারা যাওয়া ছয় জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত নিখোঁজ আছেন তিন জন। তবে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা নিরূপণ করতে আরও কয়েক দিন সময় লাগতে পারে।’
লোহাগাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শরীফ উল্লাহ বলেন, ‘লোহাগাড়ায় বন্যার পানি অনেকাংশ নেমে গেছে। চার জন মারা গেছেন। তাদের লাশ পাওয়া গেছে। রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কৃষি, মৎস্য, সবজি, গবাদিপশুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ৩০০-৪০০ মাটির ঘর বন্যায় ভেঙে গেছে। তবে কী পরিমাণ এ বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার তালিকা করা হচ্ছে।’
সাতকানিয়া উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এস ইউনুস বলেন, ‘ভয়াবহ বন্যায় ইউনিয়নের অধিকাংশ ঘরে পানি ঢুকেছে। কোনও কোনও স্থানে ঘরের চালের ওপর পর্যন্ত পানি উঠেছে। অনেকে আত্মীয়-স্বজন এবং আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছে। ইউনিয়নে তিন জন মানুষ বন্যার পানির স্রোতে ভেসে গেছে। এরমধ্যে একজনের লাশ উদ্ধার হলেও দুই জনকে এখনও পাওয়া যায়নি। বর্তমানে পানি কমছে। তবে পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে।’
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, ১৪টি উপজেলা এবং সিটি করপোরেশনের মধ্যে এক লাখ ৪০ হাজার ১২টি পারিবারের ছয় লাখ ৩৫ হাজার ১৩০ জন লোক বন্যায় পানিবন্দি হয়ে পড়েন।