এবার আ.লীগ এমপির বক্তব্যের ভিডিও ভাইরাল!
সাদাকালো নিউজ
ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত। কুমিল্লা-৭ আসনের সংসদ সদস্য। বিভিন্ন সময় এলাকার সভা-সমাবেশে বক্তব্য দিয়ে ভাইরাল হয়েছেন এই এমপি। কিন্তু এবার তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন তা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে কুমিল্লা আওয়ামী লীগে।
জানা গেছে, ২০ মে চান্দিনা উপজেলার বাতাঘাসি ইউনিয়নের শব্দল এলাকায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন প্রাণ গোপাল দত্ত। অনুষ্ঠানে এমপির দেয়া বক্তব্যের ১৭ সেকেন্ডের ভিডিও ২১ মে সকাল থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতে থাকে।
ভিডিওতে এমপি প্রাণ গোপালকে বলতে শোনা যায়, ওই আসনে মনোনয়ন পেলে তাঁকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেয়া হতে পারে। এ সময় তিনি কুমিল্লা-৭ আসনের সাবেক এমপি প্রয়াত অধ্যাপক আলী আশরাফকে নিয়েও বিরূপ মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে প্রয়াত এমপি আলী আশরাফের পরিবার ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
এছাড়া ক্ষোভ ছড়িয়েছে দলের নেতাকর্মীর মধ্যেও। উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের অভিযোগ, ডা. প্রাণ গোপাল এমপি হওয়ার পর থেকে বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে নেতিবাচক বক্তব্য করে ভাইরাল হন। এবারও তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা মিথ্যা ও বানোয়াট।
২০২১ সালের ৩০ জুলাই এমপি ও সাবেক ডেপুটি স্পিকার অধ্যাপক আলী আশরাফের প্রয়াণে শূন্য ঘোষণা করা হয় কুমিল্লা-৭ আসন। এরপর সেখানে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন প্রাণ গোপাল। ওই উপনির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। দলীয় সূত্র বলছে, এমপি হওয়ার পর থেকে নানা কারণে উপজেলা আওয়ামী লীগের সঙ্গে প্রাণ গোপালের দূরত্ব বাড়তে থাকে। দলীয় কোন্দলও চরম আকার ধারণ করে।
উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও অধ্যাপক আলী আশরাফের ছেলে মুনতাকিম আশরাফ টিটু জানান, এর আগেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তার বাবাকে নিয়ে মিথ্যা ও আপত্তিকর বক্তব্য দিয়ে ভাইরাল হয়েছেন প্রাণ গোপাল। কিন্তু এবার প্রধানমন্ত্রীকে জড়িয়ে চরম মিথ্যাচার করেছেন। তাই এমপির বিরুদ্ধে মানহানির মোকদ্দমা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
এদিকে ওই বক্তব্য দেয়ার কথা স্বীকারও করেছেন এমপি প্রাণ গোপাল দত্ত। তবে প্রয়াত এমপি আলী আশরাফের প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়ে তিনি জানান, তার বক্তব্যে কেউ ক্ষুব্ধ হয়ে মোকদ্দমা করতে চাইলে করুক।
এমপি প্রাণ গোপালের জন্ম ১৯৫৩ সালের পহেলা অক্টোবর কুমিল্লার চান্দিনায়। পড়াশোনার শুরু সেখানেই। ১৯৬৮ সালে ম্যাট্রিক পাস করার পর ভর্তি হন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে। ১৯৭০ সালে ইন্টারমিডিয়েট পাস করার পর ভর্তি হন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে।
ছাত্র থাকা অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধে নামেন প্রাণ গোপাল। স্বাধীনতার পর ফিরে যান আবার মেডিকেল কলেজে, ১৯৭৬ সালে এমবিবিএস পাস করেন। যোগ দেন সরকারি চাকরিতে। চার বছর পর উচ্চ শিক্ষার জন্য যান তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নে।
১৯৮৩ সালে দেশে ফিরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কাজ শুরু করেন প্রাণ গোপাল। সেখান থেকে নানা পদ-প্রতিকূলতা পেরিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে আসেন। দুই মেয়াদে এই দায়িত্বে ছিলেন তিনি। ২০১২ সালে চিকিৎসাবিদ্যায় স্বাধীনতা পুরস্কার পান এই নেতা।