কবে ফিরবেন নায়ক ফারুক?
সাদাকালো নিউজ
দেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনে তিনি ‘মিয়া ভাই’ নামে পরিচিত। তিনি চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান ফারুক। ছিলেন প্রভাবশালী অভিনেতা। তাঁর আরও বড় পরিচয় তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্সারের সঙ্গে লড়ছেন ‘সারেং বউ’-এর নায়ক। বর্তমানে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এই সংসদ সদস্য।
গত বছরের ৮ মার্চ থেকে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ফারুক। সেখানে তাঁর সঙ্গে আছেন স্ত্রী ফারহানা পাঠান। ইতিমধ্যে ফারুকের চিকিৎসা বাবদ অনেক টাকা ব্যয় হয়েছে।
ফারুকের ছেলে রওশন হোসেন পাঠান শরৎ দেশেই থাকেন। তিনি দেশের একটি গণমাধ্যমকে বলেন, আব্বুর চিকিৎসার জন্য আমাদের বারিধারার দুটি ফ্ল্যাট বিক্রি করতে হয়েছে। এছাড়া আব্বুর ব্যাংক অ্যাকাউন্টও শূন্য হয়ে গেছে। আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে ধার-দেনা পর্যন্ত করতে হয়েছে। এরপরও বাবার চিকিৎসায় হিমশিম খেতে হচ্ছে।
সিঙ্গাপুরে টানা ১৪ মাস ধরে চিকিৎসাধীন আছেন ফারুক। এ সময়ে একাধিকবার তাঁর দুনিয়া ছেড়ে চলে যাওয়ার গুজব রটেছে। এতে করে বিরক্ত হয়েছেন তাঁর পরিবার। সবকিছু ছাপিয়ে এখন সুস্থ হওয়ার পথে ফারুক। ছেলে শরৎ বলেন, আব্বুর শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে যাচ্ছে। এ বছরই আব্বুকে দেশে ফেরানো সম্ভব বলে মনে হচ্ছে।
ফারুকের প্রকৃত নাম আকবর হোসেন পাঠান দুলু। ১৯৪৮ সালের ১৮ আগস্ট মানিকগঞ্জের ঘিওরে তাঁর জন্ম। চলচ্চিত্রে এসেছিলেন ১৯৭১ সালে এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’ সিনেমার মাধ্যমে। অভিনয় করেছেন শতাধিক চলচ্চিত্রে। তাঁর উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলোর মধ্যে আছে- ‘লাঠিয়াল’, ‘সুজন সখী’, ‘নয়নমনি’, ‘সারেং বৌ’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘সাহেব’, ‘আলোর মিছিল’, ‘মিয়া ভাই’।
এর মধ্যে ‘লাঠিয়াল’ সিনেমাটিতে অভিনয়ের জন্য ১৯৭৫ সালে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন ফারুক। ২০১৬ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের আসরে তাকে দেয়া হয় আজীবন সম্মাননা। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে তিনি সবচেয়ে সফল ও সেরা নায়কদের একজন হিসেবে স্বীকৃত।
ছাত্রজীবন থেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ফারুক। ১৯৬৬ সালে যোগ দেন ছয় দফা আন্দোলনে। সে সময় আইনি ঝামেলায়ও পড়তে হয়েছে তাঁকে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি সরাসরি অংশগ্রহণ করেন। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৭ আসন থেকে আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ফারুক।