
যে কারণে ব্যারিস্টার সুমনের কাছে ধরাশায়ী বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী
সাদাকালো নিউজ
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী টানা দুবারের সংসদ সদস্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীকে হারিয়ে বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পরিচিত মুখ স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ সায়েদুল হক ওরফে ব্যারিস্টার সুমন।
যুবলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ সায়েদুল হক এলাকায় ‘ব্যারিস্টার সুমন’ হিসেবে পরিচিত। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন উন্নয়ন ইস্যুতে তার কর্মকাণ্ডের কারণে যুবদের কাছে বেশ জনপ্রিয় তিনি। তাঁর বাড়ি চুনারুঘাট উপজেলার বড়াইল গ্রামে।
ব্যারিস্টার সুমন ছাত্রলীগের পরে যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এবার দল থেকে মনোনয়ন চেয়ে না পাওয়ায় তিনি ঈগল প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন। অপরদিকে আওয়ামী লীগ আবারও প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীকেই মনোনয়ন দেয়।
প্রায় এক লাখ ভোটের ব্যবধানে বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদকে ধরাশায়ী করেছেন ব্যারিস্টার সুমন।
আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা বলছেন এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ঘরানার দুজন প্রার্থী হওয়ার কারণে তারা বিভক্ত হয়ে পড়েছিলেন পাশাপাশি চা-বাগানের ভোটাররা এবার নৌকার বদলে ঈগলকেই সমর্থন দিয়েছেন।
ব্যারিস্টার সুমন চা-শ্রমিকদের ভোটের পাশাপাশি এলাকার তরুণসমাজ ও নতুন ভোটারদের সমর্থন পান। অন্যদিকে বিমান প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলীর পাশে ছিলেন না স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা কারণ মন্ত্রী হওয়ার পর এলাকায় তাঁর যাতায়াত ছিল কম।
মাধবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান বলেন বিমান প্রতিমন্ত্রী ১০ বছর ধরে এ আসনের সংসদ সদস্য কিন্তু ২০১৮ সালে মন্ত্রী হওয়ার পর এলাকায় আসতেন কম যে কারণে দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তাঁর দূরত্বের সৃষ্টি হয়।
অপরদিকে প্রতিদ্বন্দ্বী ব্যারিস্টার সুমন এলাকার তরুণ ভোটারদের কাছে টানতে পেরেছেন। পাশে পেয়েছেন চা-শ্রমিকদেরও।
ছন্দ্রিছড়া চা-বাগানের বাসিন্দারা জানান এলাকায় ফুটবল খেলাসহ নানা বিনোদনের আয়োজন করে ব্যারিস্টার সুমন তরুণদের কাছে টানেন। নৌকার পাশাপাশি ঈগলেও ভোট দিয়েছেন আদিবাসী চা–শ্রমিকেরা। তাদের ক্ষোভ ছিল বিমান প্রতিমন্ত্রীকে চা-শ্রমিকদের পাশে না পাওয়ার যেহেতু তিনি এলাকায় আসতেন কম। এই কারণে তাঁর সঙ্গে সাধারণ চা-শ্রমিকদের দূরত্ব বাড়ে।
এ বিষয়ে মাধবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন বলেন, প্রতিমন্ত্রীকে দলের নেতা-কর্মীরা কোনো সময়ই কাছে পাননি। দলীয় লোকজন বা এলাকার কেউ তাঁর কাছে গেলে তিনি তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী মোছাব্বির হোসেন ওরফে বেলালকে দেখিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলতে বলেন। তাই দলের অধিকাংশ নেতা-কর্মী ক্ষোভ থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী সায়েদুল হকের জন্য কাজ করেন।
সায়েদুল হক সুমন বিজয়ের পর তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন এ জয় সত্যিই আনন্দের তবে এ অর্জনই শেষ নয়।
“আমার বড় দায়িত্ব মানুষের জন্য কাজ করা। তাঁদের পরামর্শে এলাকার উন্নয়নে কাজ করাই মূল উদ্দেশ্য।”