
কেন হারলেন মমতাজ?
সাদাকালো নিউজ
মানিকগঞ্জ-২ আসনে টানা তিনবারের সংসদ সদস্য ও কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম পরাজিত হয়েছেন প্রথমবার নির্বাচনে দাঁড়ানো স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলুর কাছে ।
স্থানীয়রা বলছেন, নিজ দলের নেতা–কর্মী, উপজেলা ও ইউপি চেয়ারম্যানদের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হওয়াই কাল হয়েছে মমতাজের জন্য।
সিঙ্গাইর, হরিরামপুর এবং সদরের তিনটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত মানিকগঞ্জ-২ আসনে দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলু পেয়েছেন ৮৮ হাজার ৩০৯ ভোট আর মমতাজ বেগম পেয়েছেন ৮২ হাজার ১৩৮ ভোট। টুলু জেলা আওয়ামী লীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিতি থাকলেও রাজনীতির সঙ্গে সম্পর্কহীন টুলু সম্প্রতি মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন। তবে মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন তিনি।
বিভিন্ন পর্যায়ের স্থানীয় নেতারা বলেন ২০১৪ সালে মমতাজ বেগম আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর সিঙ্গাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সকল নেতা–কর্মীদের সঙ্গে তাঁর ভালো সম্পর্ক ছিল।
গত উপজেলা নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সায়েদুল ইসলাম নৌকার মনোনয়ন চেয়েও তা পাননি। কিন্তু মমতাজ বেগমের ভাগনে মনোনয়ন পাওয়ায় অন্তর্দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়।
এরপর সিঙ্গাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে কেন্দ্র থেকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মাজেদ খানকে সভাপতি না করে মমতাজ বেগম নিজেকে সভাপতি এবং তাঁর ভাগনে শহিদুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করেন। এতে মমতাজের সঙ্গে মাজেদের দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়।
এই ঘটনার পর থেকে মাজেদ খান এবং সায়েদুল ইসলাম এক হয়ে তাঁদের অনুসারীদের নিয়ে বিভিন্নস্থানে আয়োজিত কর্মসূচীতে মমতাজের বিরুদ্ধে তাঁর দুর্নীতি এবং সিঙ্গাইর উপজেলায় উন্নয়ন না হওয়ার কথা বলতে থাকেন। এতে নির্বাচনী এলাকায় মমতাজ বেগমের ইমেজ নষ্ট হতে থাকে যার প্রভাব নিবার্চনী ফলাফলে পড়েছে বলে মনে করেন স্থানীয় নেতা–কর্মীরা।
এ বিষয়ে বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহিদ আহমেদ টুলু বলেন আওয়ামী লীগের গত ১৫ বছরে সারা দেশে ব্যপক উন্নয়ন হলেও ঢাকার সবচেয়ে কাছের উপজেলা সিঙ্গাইর এবং হরিরামপুর উপজেলায় কোনো উন্নয়ন হয়নি। এ সময়ে সিঙ্গাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের যেসব কমিটি হয়েছে তা পারিবারিক কমিটি হয়েছে।
“এ কারণে সিঙ্গাইর উপজেলার সাবেক সাধারণ সম্পাদক বর্মান, যুগ্ম সম্পাদকসহ সিঙ্গাইর উপজেলার ১১ জন ইউপি চেয়ারম্যানের মধ্যে ৯ জন তাঁর সঙ্গ ত্যাগ করে আমার কাছে আসেন। তাঁরা আমার পক্ষে নির্বাচনে নিঃস্বার্থভাবে কাজ করায় আমি বিজয় হতে পেরেছি।”