কী কারণে সংসার ভাঙলো সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের ?
সাদাকালো নিউজ
আওয়ামী লীগ থেকে স্থায়ীভাবে বাদ পড়ার পর সংসার জীবন নিয়ে টালমাটাল অবস্তায় গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। সম্প্রতি জাহাঙ্গীরের স্ত্রী কাজী রাজিয়া সুলতানা জয়ীর বিচ্ছেদের নোটিশটি বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক ভাইরাল হয়।
নোটিশে অভিযোগ করা হয়, স্ত্রীকে মানসিক এবং পারিবারিক অশান্তিতে রেখেছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। একিসঙ্গে স্ত্রীর ভরণপোষণ না দেয়ায় অনেকদিন ধরেই সংসারে অশান্তি বিরাজ করছিলো। এমন অভিযোগে চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল জাহাঙ্গীর আলমকে বিচ্ছেদের নোটিশ পাঠান স্ত্রী জয়ী।
তবে বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছিলেন জাহাঙ্গীর। কাছের আত্মীয়রাও এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে চাননি। তবে ১৬ই মে নগরীর ছয়দানা এলাকার নিজ বাসায় সংবাদ সম্মেলনে বিচ্ছেদের নোটিশ সম্পর্কে জানতে চান সাংবাদিকরা।
স্ত্রী প্রসঙ্গে কিছুটা বিব্রত হয়ে জাহাঙ্গীর আলম জানান, এটা তাদের পারিবারিক বিষয় তাই পরিবারের মধ্যেই রাখতে চান। এখন তিনি রাজনীতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করছেন। ২৫ তারিখ গাজীপুর সিটির ভোট, তাই সবাইকে ভোট নিয়েই থাকতে বলেন তিনি।
জাহাঙ্গীর আরও জানান, এখন অনেকেই অনেক ধরনের ভালো, খারাপ কথা বলবে। এটা তাদের ব্যাপার। তবে তিনি কারো পরিবার, কারো ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে কথা বলতে চান না। যদি কেউ এ বিষয়ে কথা বলতে চান তাহলে তাকে বাসায় এসে শুনে যেতে বলেন।
বিচ্ছেদের নোটিশে দেখা যায়, ২০১১ সালের ১৮ই ফেব্রুয়ারি মিরপুরের বাসিন্দা কাজী ইকবাল বাহারের মেয়ে কাজী রাজিয়া সুলতানা জয়ীর সঙ্গে গাজীপুরের বাসিন্দা মিজানুর রহমানের ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে জাহাঙ্গীর আলম স্ত্রীকে মানসিকভাবে নির্যাতন ও নিয়মিত ভরণপোষণ না দেয়ায়, সংসার জীবনে অশান্তি শুরু হয়।
নোটিশে আরও বলা হয়, ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন ৮নং অধ্যাদেশ, ৫২নং আইনের ৭(১) ধারায় সম্পর্কের বিষয়টি অবহিত করা হলো। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতি না হলে ৯০ দিন পর চূড়ান্তভাবে বিচ্ছেদ কার্যকর হবে। নোটিশের একটি অনুলিপি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র এবং মিরপুর শাহআলীর কাজী অফিসে পাঠানো হয়।
এর আগে ১৫ই মে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে আওয়ামী লীগ থেকে আজীবনের জন্য বাদ দেয়া হয়। দলের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত চিঠিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়। বলা হয়, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ সংগঠনের বিধি মোতাবেক গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমকে দল থেকে স্থায়ীভাবে বাদ দেয়া হয়েছে। এটি দ্রুত কার্যকর হবে।
মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের সংখ্যা ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে ২০২১ সালের ১৯ নভেম্বর জাহাঙ্গীর আলমকে দলের প্রাথমিক সদস্যপদসহ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়।
চলতি বছরের পহেলা জানুয়ারি শর্তসাপেক্ষে ক্ষমা করে ফের জাহাঙ্গীরকে দলে নেয় আওয়ামী লীগ। তবে আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে মা জায়েদা খাতুনের পক্ষে প্রচারণায় নেমে পুনরায় বহিস্কার হলেন জাহাঙ্গীর আলম।