বিএনপির সাথে সম্পর্ক নিয়ে মুখ খুললেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী
সাদাকালো নিউজ
বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি। এবার বিএনপির সাথে সম্পর্ক নিয়ে মুখ খুলেছেন তিনি। ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির জোট জাতীয় ঐক্যফন্টের শরিক হয়ে অংশ নেয়াকে ‘জীবনের সেরা ভুল’ মনে করছেন। তবে বিএনপিকে দেখে নয়, সেই জোটের প্রধান নেতা হিসেবে সামনে আসা ড. কামাল হোসেনকে দেখেই তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলে জানান।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, অনেকেই মনে করেন আমি ধানের শীষে নির্বাচন করেছি। ধানের শীষ হয়ে গেছি। আমি ধানের শীষে কোনো দিন যাই নাই। ড. কামাল হোসেনকে নেতা মনে করেছিলাম বলেই গিয়েছিলাম। যদি সেটা আমার ভুল হয়ে থাকে তাহলে ভুল হয়েছে। জীবনের সেরা ভুল। কিন্তু আমি বিএনপিতে যাই নাই।
কাদের সিদ্দিকী আরও বলেন, বিএনপিকে আমি বন্ধুও মনে করি না, বিএনপি আমার শত্রুও না। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে বাদ দিয়ে বিএনপি আসমান এনে দিলেও তারা আমাকে পাবে না।
সম্প্রতি টাঙ্গাইল শহরের শহীদ মিনারে সখীপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র সানোয়ার হোসেন সজীবের কৃষক শ্রমিক জনতা লীগে যোগদান অনুষ্ঠান হয়। সেখানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাদের সিদ্দিকী এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে কাদের সিদ্দিকী বলেন, আমার বোনের সঙ্গে একটু দেখা হওয়ায় আমার দলের অনেক মানুষ মনে করছে, আমি নৌকা মার্কা হয়ে গেছি। এসব কিছুই হয়নি। আমি বঙ্গবন্ধুর ছিলাম, বঙ্গবন্ধুর আছি, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে সারা জীবন কাটিয়ে যাব। এখানে কোনো আপস নেই।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে নিজের মেয়ের ভোটের কথা তুলে ধরে জনতা লীগ নেতা বলেন, ‘আমার মেয়ে কুঁড়ি সিদ্দিকী সখীপুর-বাসাইল থেকে ভোটে দাঁড়িয়েছিল। দেড় থেকে দুই ঘণ্টা ভোট হয়েছিল। ৭২ হাজার ভোট পেয়েছিলো। ভালোই হয়েছে। আমার মেয়ে যদি ভোটে জিততো, তাহলে তাকে পদত্যাগ করতে হতো। আল্লাহই তাকে পদত্যাগ করিয়ে দিয়েছে। চোরের পার্লামেন্টে আমার মেয়ে কেমনে যেত। সেটা যাওয়া ঠিক হতো না।
১৯৯৬ সালে টাঙ্গাইল-৮ আসন থেকে নৌকা প্রতীকে সংসদ সদস্য হন কাদের সিদ্দিকী। দলের সঙ্গে বিরোধের জেরে তিন বছর পর আওয়ামী লীগ ছেড়ে তিনি গঠন করেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ। ২০০১ সালে সেই দলের হয়েই সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর থেকে আওয়ামী লীগের কট্টর সমালোচক হয়ে উঠেন তিনি। যোগাযোগ বাড়ে বিএনপির সঙ্গে।
২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে বিএনপির ২০ দলীয় জোটের পাশাপাশি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামে যে জোট গঠন করা হয়, তাতেও অংশ নেয় কাদের সিদ্দিকীর দল। জোট থেকে তাকে টাঙ্গাইল-৪ ও টাঙ্গাইল-৮ আসন থেকে মনোনয়ন দেয়া হয়। তবে খেলাপি ঋণের অভিযোগে দুটি মনোনয়নই বাতিল হয়ে যায়।
পরে টাঙ্গাইল-৮ আসনে মনোনয়ন পান তার মেয়ে কুঁড়ি সিদ্দিকী। তবে নৌকার প্রার্থীর কাছে হেরে যান বড় ব্যবধানে। ভোটের পরে সবার আগে ঐক্যফ্রন্ট ছাড়েন কাদের সিদ্দিকী। পরে এক আলোচনায় বলেন, ‘আমি একজন গাধা। এ জন্য ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্টে গিয়েছিলাম।’
২০২২ সালের ২৩ ডিসেম্বর রাজনীতিতে শুরু হয় নতুন আলোচনা। সেদিন গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সপরিবারে দেখা করেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ নেতা। সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী নাসরিন সিদ্দিকী এবং তাদের দুই কন্যা।