ইমনের অদম্য ইচ্ছায় হার মেনেছে দারিদ্যতা
সাদাকালো নিউজ
ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে সাইকেল নিয়ে কাছিকাটা বাসস্ট্যান্ড ছুটে যায় ইমন। সেখান থেকে পত্রিকা সংগ্রহ করে গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দেয় ১৮ বছরের এই কিশোর। পত্রিকা বিক্রি করে নিজের পড়াশোনার খরচ চালানো ইমন এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে।
গেল বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া এসএসসি পরীক্ষার প্রথমদিনও সকালে পত্রিকা বিক্রি করে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে সে। নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার অদম্য এই কিশোরের পুরো নাম মনিরুল ইসলাম ইমন। বাবার নাম আশরাফুল ইসলাম। মা প্রয়াত শাহনাজ বেগম। শিকারপুর কৃষি কারিগরী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল শাখার শিক্ষার্থী সে।
জানা যায়, ইমনের বাবা পেশায় একজন ভ্যানচালক। মা পরপারে যাওয়ার পর ইমনের বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করে। আর্থিক অনটনের কারণে ইমনের পড়াশোনা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। সংসারের খরচ মিটিয়ে ইমনের বাবা কোনোভাবেই তার পড়াশোনার খরচ চালাতে পারছিল না। তবে ইমনের অদম্য ইচ্ছা শক্তির কাছে হার মেনেছে দারিদ্রতা।
লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার জন্য দেড় বছর আগে পত্রিকা বিক্রির কাজ শুরু করে ইমন। স্থানীয় এজেন্টের কাছ থেকে প্রায় ২০০ কপি পত্রিকা বিক্রি করে মাসে ৫ হাজার টাকা আয় করে সে। পত্রিকা বিক্রি করে উপার্জিত টাকায় নিজের পড়াশোনার খরচ চালানোর পাশাপাশি সংসারের খরচও বহন করে এই কিশোর।
প্রতিদিন প্রায় ৩০ কিলোমিটার রাস্তা সাইকেল চালিয়ে গ্রাহকদের কাছে পত্রিকা পৌঁছে দেয় সে। এসএসসি পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর একটু তাড়াহুড়ো বেড়েছে তার। সকালে পত্রিকা গ্রাহকদের কাছে পৌছে দিয়ে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। পত্রিকা বিক্রির পাশাপাশি একজন ডাক্তারের চেম্বারেও সময় দেয় ইমন। সেখান থেকেও কিছু টাকা পায় সে। সেই টাকায় পড়াশোনার খরচ চালায়।