জায়েদার বাজেট ৩০ লাখ টাকা!
সাদাকালো নিউজ
৭০ বছর বয়সের জায়েদা খাতুন। রাজনীতিতে তেমন হাতেখড়ি না থাকলেও নেমেছেন ভোটের মাঠে। তিনি ব্যাপক আলোচিত-সমালোচিত সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা। বাছাইকালে জাহাঙ্গীরের মনোনয়নপত্র বাতিল এবং আপিলেও প্রার্থিতা ফিরে না আসায় এবার প্রকাশ্যে ভোটের মাঠে এলেন জায়েদা খাতুন।
২৫ মে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন ঘিরে আলোচিত চরিত্রে পরিণত হয়েছেন জায়েদা খাতুন। জাহাঙ্গীরের মনোনয়ন বাতিল হওয়ার পর তার কর্মী সমর্থকরা এখন মায়ের পাশেই দাঁড়িয়েছেন। গাজীপুর সদরের ছয়দানা এলাকার বাসায় জাহাঙ্গীরের বাড়িতেই থাকেন তার মা।
৬ মে প্রথমবারের মতো সংবাদমাধ্যমের সামনে আসেন জায়েদা খাতুন। এদিন নির্বাচনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলেন তিনি। জানান, তার কাছে নগদ ৩৫ লাখ টাকা আছে। ব্যাংকে আছে আরও ৫০ হাজার। আর এই টাকার মধ্যে নির্বাচনের সম্ভ্যব্য ব্যয় দেখিয়েছেন ৩০ লাখ। এর মধ্যে পোস্টার ছাপাবেন ৩ লাখ ৪২ হাজার টাকায়। ১০টি নির্বাচনী ক্যাম্প স্থাপনে ধরা হয়েছে ১০ হাজার করে। আর ক্যাম্পে কর্মীদের খরচ হবে ৯০ হাজার টাকা।
এছাড়া কেন্দ্রীয় কার্যালয় স্থাপনে ৫০ হাজার, কর্মীদের খরচসহ মোট ব্যয় উল্লেখ করা হয়েছে ২ লাখ ৩০ লাখ টাকা। প্রার্থীর যাতায়াত, ঘরোয়া বৈঠক, লিফলেট-পোস্টার এবং মাইকিংয়ে খরচ হবে বাকি টাকা। গাজীপুর সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দেয়া হলফনামায় জায়েদা খাতুন জানিয়েছেন, তিনি স্বশিক্ষিত। আয়ের উৎস ব্যবসা।
হলফনামায় দেখা গেছে, ব্যবসা থেকে তার বার্ষিক আয় ৩ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। বন্ড, ঋণপত্র ও ‘অনারেবল টেক্সটাইল কম্পোজিট লিমিটেড’ নামে একটি পোশাক কারখানা থেকে বছরে আড়াই লাখ টাকা আয় করেন তিনি। এছাড়া দেড় লাখ টাকার ইলেকট্রনিক সামগ্রী, ১ লাখ ২০ হাজার টাকার আসবাব ও ৩০ তোলা স্বর্ণালংকার থাকার কথা উল্লেখ করেছেন হলফনামায়।
এদিকে ছেলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছে দাবি করে প্রতিবাদ হিসেবে শেষ পর্যন্ত ভোটের লড়াইয়ে থাকবেন বলে জানিয়েছেন জায়েদা খাতুন। বলেন, মিথ্যা ও ভুয়া অভিযোগ তুলে তার ছেলের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। ১৮ মাস ধরে তার ছেলের ওপর অবিচার হয়েছে। এর প্রতিবাদেই তিনি নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হয়েছেন।
তিনি আরও জানান, তার ছেলের সঙ্গে নগরবাসির নাড়ির সম্পর্ক। দীর্ঘদিন ধরে নগরবাসীর কল্যাণে নিজেকে সমর্পন করেছে জাহাঙ্গীর। নগরের প্রশস্ত রাস্তাঘাট তার দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনার ফসল। অথচ নগরের উন্নয়ন থমকে দিয়ে তার বিরুদ্ধে নানা অপবাদ তোলা হয়েছে। জনগণ এবার ভোটের মাধ্যমে সব অপবাদের জবাব দেবেন বলে বিশ্বাস তার।
গাজীপুর সিটি নির্বাচনে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। বাছাইয়ে ঋণখেলাপির কারণে তার প্রার্থিতা বাতিল হয়ে যায়। মা ও ছেলে দুজন মনোনয়নপত্র কেনায় তার মায়েরটা বৈধ বলে ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
জাহাঙ্গীর আলম আপিলে প্রার্থিতা ফিরে না পাওয়ায় এখন উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা বলছেন। সবশেষ যদি তিনি আর না-ই নির্বাচনের সুযোগ পান, তবে তার মাকে নিয়েই নির্বাচনী মাঠে থাকবেন বলে জানিয়েছেন তার কর্মী-সমর্থকরা।