৭০ বছরের বরের ৩৫ বছরের কনে!
সাদাকালো নিউজ
নাম শওকত আলী। বয়স ৭০। বাড়ি বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার পেড়িখালী ইউনিয়নের জিগিরমোল্লা গ্রামে। রামপাল সরকারি কলেজের অধ্যাপক ছিলেন তিনি। ২৫ বছর আগে অবসরে যান।
পরিবারের প্রতি দায়িত্ব পালন, আর স্বাধীনতা হারানোর ভয়ে বিয়ে করেননি তিনি। কিন্তু শেষ বয়সে এসে একাকিত্ব বোধ করা শুরু করেন শওকত আলী। অতঃপর বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন।
১৮ই বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন শওকত আলী। কনে মোংলা উপজেলার শাহিদা আক্তার নাজু। ৩৫ বছর বয়সী নাজুর একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। ১০ লাখ ১ টাকা দেনমোহরে নগদ ৫ লাখ টাকা উশুলে স্থানীয়দের উপস্থিতিতে তাদের বিয়ে হয়। এ সময় দুই পরিবারের স্বজনরাও উপস্থিত ছিলেন।
বরের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রামপাল সরকারি কলেজে ৩৩ বছর শিক্ষকতা করেছেন শওকত আলী। ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন তিনি। ২০১৪ সালে অবসরে যান।
শওকত আলী জীবনের মূল্যবান সময় শিক্ষকতা, ভাইবোন ও সমাজসেবায় ব্যয় করেছেন। নিজের করা জমিতে একটি ভবনও করেননি। সারাজীবন চিরকুমার থাকবেন বলে জানাতেন। ৭০ বছর বয়সে এসে সেই পণ ভেঙেছেন শিক্ষক।
শওকত আলীর ভাই আবদুল হালিম খোকন বলেন, সারাটা জীবন তিনি আমাদের সুখে-দুঃখে বটবৃক্ষের মতো আগলে রেখেছেন। বর্তমানে আমরা নিজেদের কর্ম এবং ব্যবসার কাজে ব্যস্ত থাকি। ফলে আমাদের ভাই অনেকটা একাকিত্ব বোধ করছিলেন।
তিনি আরও বলেন, ভাইয়ের একাকিত্ব দূর করতে ও তার দেখভাল করতে একজন সঙ্গিনী খুব দরকার ছিলো। তাই আমরা তাকে বিয়ের জন্য জোরাজুরি করলে একটা সময় এসে তিনি রাজি হন। পরে মংলা উপজেলার শাহিদা আক্তার নাজুর সঙ্গে ভাইয়ের বিয়ে দেই।
কনের আগের সংসারের সন্তানের বিষয়ে আবদুল হালিম খোকন বলেন, মেয়েটার দায়িত্ব আমার বড় ভাই নিয়েছেন। তারা বর্তমানে সুখে-শান্তিতে সংসার করছেন। পরিবারসহ নতুন বর এবং কনে আগামীতে হজে যাবেন, আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে নতুন দম্পতির জন্য দোয়া কামনা করছি।
বৃদ্ধ বয়সে শিক্ষকের বিয়ের বিষয়ে স্থানীয়রা বলছেন, স্যার অত্যন্ত ভালো মানুষ। তবে এই বয়সে এসে তিনি বিয়ে করবেন এটা আমরা ভাবিনি। আমাদের মতে তিনি ভালো কাজ করেছেন। এই বয়সে একজন সঙ্গিনীর পাশে থাকা খুব প্রয়োজন।