২ মাসের চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরলেন আঁখি!
সাদাকালো নিউজ
ছোটপর্দার অভিনেত্রী শারমিন আঁখি। শুটিংয়ে গিয়ে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন তিনি। দীর্ঘ দুই মাস হাসপাতালে ভর্তিও থাকতে হয়েছে তাকে। অবশেষে মঙ্গলবার বাড়ি ফিরেছেন এই অভিনেত্রী। ফেরার আগে সংবাদ সম্মেলন করে সেই দিনের অনাকাঙ্খিত ঘটনাটি নিয়ে কথাও বলেছেন সাংবাদিকদের সঙ্গে।
আঁখি বলেন, সামনের ৬ মাস আমার জন্য আরও অনেক কষ্টের। কারণ, আগামী ৬ মাস আমি শরীরে রোদ লাগাতে পারব না। লাইটের আলো থেকেও নিজেকে দূরে রাখতে হবে। নিজেকে পুরোপুরি অন্ধকার ঘরে বন্দি রাখতে হবে। এমনকি এই ৬ মাস অনেক নিয়মের মধ্যে চলতে হবে। দুঃখের পর যেমন সুখ আছে, তেমনি খারাপের পরে ভালো আছে। সেই সুদিনের অপেক্ষায় আমি।
চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি মিরপুরের একটি শুটিং বাড়ির মেকআপ রুমে আগুনে ক্ষতিগ্রস্থ হন ছোট পর্দার এই অভিনেত্রী। সেদিনই তাকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। সেই ঘটনায় আঁখির হাত, পা, চুলসহ শরীরের ৩৫ ভাগ ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এর মধ্যে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটায় তাকে প্লাজমাও দিতে হয়েছিলো।
শারমিন আঁখি বলেন, যখন আইসিইউতে ভর্তি হই তখন এক ধরনের আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম আমি হয়ত আর ফিরতে পারব না। ডাক্তাররাও আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন। নিঃশ্বাস চলে যাওয়া কি জিনিস সেটা আমি উপলব্ধি করেছি। দীর্ঘশ্বাস ফেলে তখন নিজেকে নিজেই সাহস দিতাম।
আমাকে নিয়ে ভুল তথ্য ছড়ানো হয়েছে এমন অভিযোগ করে নায়িকা বলেন, কে এই পোড়া হাত-মুখ দেখাবে বলুন? কেউ দেখাবে না। আমি কেন এই চেহারা নিয়ে সামনে এসেছি? কারণ, আমাকে নিয়ে কুৎসা রটানো হয়েছে। কিভাবে ঘটনাটি ঘটেছে সে বিষয়টি না এসে কি করেছি সবার মনে এই একটাই প্রশ্ন।
একটা বাড়ি পুরোপুরি প্রস্তুত না করেই শুটিংয়ের জন্য ভাড়া দেয়া হয়েছে। এখনো হচ্ছে। নিরাপত্তা নিয়ে ভাবা উচিত কিনা? অভিনেত্রী বলেন, এই ঘটনার পরেও যদি নিরাপত্তা নিয়ে না ভাবা হয় তাহলে এটা আমাদের ব্যর্থতা। আমরা আমাদের শিল্পীদের নিরাপত্তা দিতে পারছি না। সংগঠনগুলোও ব্যর্থতার পরিচয় দেবে।
ঘটনার দিনটি স্মরণ করে আঁখি বলেন, যখন ঘটনাটি ঘটে দুই হাত সামনে দিয়ে নিজের চেহারাটা কিছুটা রক্ষা করার চেষ্টা করেছি। মুহূর্তেই সবকিছু এলোমেলো হয়ে গেল। কিছু বুঝে উঠতে পারিনি। বার্নের যন্ত্রণা অসহনীয়। যখন ঘটনাটি মনে হয় তখন বিষয়টি সামনে ভাসে।
এ সময় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, আমাদের ডাক্তারদের তত্ত্বাবধানে দুই মাস চিকিৎসা শেষে আঁখিকে অনেকটা সুস্থ করে তুলতে পেরেছি। তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দিচ্ছি।
আঁখির স্বামী রাহাত কবির অভিযোগ করে বলেন, দুইমাস পেরিয়ে গেলেও ওই শুটিং হাউজের কেউ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। এত বড় একটি ঘটনা ঘটে গেল… তাদের কী উচিত ছিল না আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা? সবাই শুধু বলছেন স্মোকিং থেকে ঘটনাটি ঘটেছে। আসল সত্য এটি নয়। এখানে অন্য কোনো ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের সেই কারণ উদঘাটন করা উচিত ছিলো। আঁখি এখন মোটামুটি সুস্থ। সে নিজেই তাদের সংগঠনের মাধ্যমে সবকিছুর জবাব চাইবেন আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।