হাতের মেহেদি মুছে যাওয়ার আগেই বিধবা ডালিয়া!
সাদাকালো নিউজ
এই প্রেমের গল্পটি হয়তো আপনার মনে দাগ কাটবে না। কিংবা ভাইরাল হবে না সামাজিক মাধ্যমে। তবুও আমাদের এই আয়োজন। একটি বেসরকারি কুরিয়ার সেবা প্রদানকারী কোম্পানির ডেলিভারিম্যান নাহিদ হোসেন। প্রেমে পড়েন আরেক তরুণী ডালিয়া ডলির। বেশ কয়েক বছর চলে লুকোচুরির প্রেম। এরপর নিজেদের প্রেমকে পরিণতি দিতে করেন মালা বদল। স্বামী-স্ত্রী হিসেবে শুরু করেন সংসার।
অভাবের সংসার হলেও, বেশ সুখেই দিন কাটছিলো নাহিদ-ডালিয়া দম্পতির। একসঙ্গে পুরো জীবন কাটিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের। কিন্তু এই সুখ বেশিদিন সইলো না তাদের কপালে। বিয়ের মাত্র ছয় মাসের মাথায় স্বামীহারা হলেন ডালিয়া।
ডালিয়া ছিলেন স্বামী অন্তঃপ্রাণ। কয়েকদিন আগেও হাতে মেহেদি দিয়ে লিখেছিলেন ‘আই লাভ ইউ নাহিদ’। সেই লেখা এখনো জ্বলজ্বল করছে। এমনকি মুছেনি মেহেদির রঙও। কিন্তু এরইমধ্যে ডালিয়ার ভালোবাসার সেই মানুষটি আর নেই।
দুইদিন আগেও স্বামীর ভালোবাসায় উচ্ছ্বসিত ডালিয়ার, জীবন এখন পুরোই এলোমেলো। ফটোর ফ্রেমে থাকা স্বামীর ছবিই এখন মেয়েটির বেঁচে থাকার একমাত্র সম্বল।
মঙ্গলবার থেকে বারবার স্বামী নাহিদের ছবি দেখে এক টানা কান্না করেই যাচ্ছেন স্ত্রী ডালিয়া। কান্নাজড়িত কণ্ঠে ডালিয়া বলেন, যে মানুষটাকে একবার না দেখলে থাকতে পারতাম না, কোন কিছু ভালো লাগতো না। তারে ছাড়া এখন আমি সারাজীবন কেমনে থাকুম? এখন কে আমাকে ভরসা দিবো?
ডালিয়া শুধু বলছেন, ‘আমার স্বামী তো কোনো অপরাধ করে নাই। সে তো কেবল কাজে যাচ্ছিলো, তাঁকে কেন শেষ করে দেয়া হলো?
মোবাইল ফোনে স্বামীর ছবি বের করে বারবার দেখছিলেন তিনি। তার সরল জিজ্ঞাসা, ‘আমারে রাইখা ক্যান চইলা গেল, আমি এখন কার কাছে থাকব’।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে ডালিয়া আরও বলেন, ‘মঙ্গলবার কিছুটা অসুস্থ ছিলাম। নাহিদকে কাজে যেতে মানা করেছিলাম। নাহিদ বলে, করোনায় কাজ বন্ধ ছিল অনেকদিন। রোজায় আর কাজ বন্ধ রাখা যাবে না। বস ফোন দিয়েছে, কাজে যেতে হবে। এই বলে সে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। এরপর আর কোনো কথা হয়নি।’
সুস্থ সবল একটা মানুষ বাড়ি থেকে বের হলো। এখন দেখি নিথর হয়ে আছে। এসব বলতে বলতে ফের বিলাপ করে অঝোরে কাঁদছেন নাহিদের স্ত্রী।