হাজতে কেমন আছে আলোচিত সেই মিন্নি?
সাদাকালো নিউজ
আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি। বরগুনার রিফাত শরীফকাণ্ডে সর্বোচ্চ শাস্তি পেয়ে গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা হাজতের কনডেম সেলে বন্দি রয়েছেন। সেখানে তিনি ভালো নেই বলে দাবি করেছেন তাঁর বাবা মোজ্জাম্মেল হোসেন কিশোর।
মিন্নির বাবা দেশের একটি গণমাধ্যমকে বলেন, হাজতে আমার মেয়ে বেঁচে আছে এটাই আল্লাহর কাছে লাখো কোটি শুকরিয়া। তার শরীরে নানা ধরনের রোগ বাসা বেঁধেছে। এছাড়াও কারা কর্তৃপক্ষ মিন্নির সঙ্গে ভালো আচরণ করছেন না বলে একটি বিশেষ সূত্রে জানতে পেরেছি। মিন্নির জামিন চেয়ে আবেদন করা হলেও এখনও সেই আবেদনের শুনানি হয়নি।
তবে কারা কর্তৃপক্ষের দাবি, মিন্নি ভালো আছেন। সুস্থ আছেন। প্রতি সপ্তাহে পরিবারের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন। ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলছেন। তবে কোনো এক কারণে মাংস খান না তিনি।
রিফাতকাণ্ডের পর দীর্ঘদিন পুলিশ নজদারিতে রাখে মিন্নিকে। ২০১৯ সালের ১৭ জুলাই বরগুনা পুলিশ লাইনসে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে আটক দেখানো হয়। এর পর মাঝে জামিনেও ছিলেন তিনি। পরে সেই জামিন বাতিল করা হয়। সে সময়ে বরগুনা জেলা হাজতে ছিলেন মিন্নি। সর্বোচ্চ সাজার পর তাকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।
মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর বলেন, হাজতে দেয়া খাবার মিন্নি খেতে পারে না। হাজতের ক্যান্টিন থেকে খাবার কিনে খেতে গেলে অনেক টাকা লাগে। ওখানে একটি ডিমের দাম ৮০ টাকা, এক টুকরো মুরগির মাংশের দাম দেড়শ টাকা, একটি ডাবের দাম দেড়শ টাকা। যার টাকা আছে সেই হাজতে ভালো থাকতে পারে।
তিনি আরও বলেন, হাজত থেকে বের হওয়া একজনের কাছ থেকে আমি শুনেছি, সেখানে আমার মেয়েকে দিয়ে ড্রেন পরিষ্কার করানো হয়। অন্য কারো অপরাধ আমার মেয়ের ওপর চাপিয়ে শাস্তি দেয়া হয়।
মিন্নির বাবার অভিযোগ অস্বীকার করে কাশিমপুর মহিলা কারাগারের জেল সুপার মো. ওবায়দুর রহমান জানান, সর্বোচ্চ শাস্তি পাওয়া কয়েদি মিন্নি। তাকে দিয়ে কোনো কাজ করানোর সুযোগ নেই। আর প্রিজন ক্যান্টিনে একটি ডিমের দাম ২০ থেকে ২৫ টাকা। একশ্রেণির মানুষ বাইরে প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছে।
২০১৯ সালের ২৬ জুন বরগুনা শহরের সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে শাহনেওয়াজ রিফাত শরীফকে শেষ করে দেয়া হয়। এ ঘটনায় প্রত্যক্ষ সাক্ষী ছিলেন তাঁর স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি। পরবর্তীতে তিনিই হয়ে যান অন্যতম অভিযুক্ত। কারণ তার পরিকল্পনাতেই প্রেমিক নয়ন বন্ড শেষ করেন রিফাতকে। পরে ওই বছরের দোশরা জুলাই পুলিশের সঙ্গে সংঘাতে নয়ন বন্ডও পরপারে পাড়ি দেন।
বরগুনার ঘটনায় ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত মিন্নিসহ ছয়জনকে সর্বোচ্চ শাস্তি দেন। নিম্ন আদালতের দেয়া মিন্নির এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছে তাঁর পরিবার। তবে এখনও আপিলের শুনানি হয়নি।