হজ প্যাকেজ অমানবিক: হাইকোর্ট
সাদাকালো নিউজ
সরকারি ব্যবস্থাপনায় এবারের হজ প্যাকেজকে অমানবিক ও অযৌক্তিক বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে হজের ব্যয় নিয়ে সবশেষ অবস্থা জানাতে সরকারকে নির্দেশও দিয়েছে উচ্চ আদালত।
মঙ্গলবার হজের প্যাকেজ মূল্য পুনঃনির্ধারণ চেয়ে করা এক রিটের শুনানিতে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন। আদালত এ মোকদ্দমার পরবর্তী শুনানির জন্য ১৫ই মার্চ দিন নির্ধারণ করেন।
এবার সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যেতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যেতে মাথাপিছু খরচ পড়বে ৬ লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা। কোরবানির খরচ এই প্যাকেজের মধ্যে ধরা হয়নি। এর আগের বছর হজ খরচ ছিল ৫ লাখ ২২ হাজার ৭৪৪ টাকা। অর্থাৎ আগের বছরের চেয়ে দেড় লাখ টাকা বেশি।
হজের খরচ এক বছরের ব্যবধানে প্রায় দেড় লাখ টাকা বেড়ে যাওয়া নিয়ে সমালোচনা চলছে বিভিন্ন মহলে। হজের আগাম নিবন্ধনেও এর প্রভাব পড়েছে। অনেকে খরচ বেড়ে যাওয়ায় এবার হজে যাওয়ার ইচ্ছা বাদ দিয়েছেন। কেউ কেউ হজের পরিবর্তে ওমরায় যাচ্ছেন।
হাইকোর্ট বলেন, ধর্ম মন্ত্রণালয় একটি অথর্ব মন্ত্রণালয়। হজে যাওয়ার জন্য যে প্যাকেজ নির্ধারণ করা হয়েছে তা অমানবিক ও অযৌক্তিক। বিশ্বের অন্যান্য দেশে হজের জন্য সরকার আলাদা বাজেট রাখে, কিন্তু বাংলাদেশে এটি নেই।
আদালত আরও বলেন, হজের প্যাকেজ মূল্য অনেক বেশি হওয়ায় আমরা হজে যাওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। আর গরীব মানুষরা কিভাবে যাবে?
এর আগে ১২ই মার্চ হজের প্যাকেজ মূল্য কমিয়ে পুনরায় প্যাকেজ ঘোষণা করতে রিট দায়ের করা হয়। রিটে বাংলাদেশ বিমান ও সৌদি এয়ারলাইন্স ছাড়াও যেকোনো এয়ারলাইন্সে টিকিট কেটে হজে যাওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়। রিটে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।
এরও আগে ঘোষিত হজ প্যাকেজের খরচ কমিয়ে ৪ লাখ টাকা নির্ধারণ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়। ৬ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও আল কোরআন স্টাডি সেন্টারের প্রধান সমন্বয়ক আশরাফ উজ জামান হজের প্যাকেজ কমানোর নির্দেশনা চেয়ে নোটিশটি পাঠান। জবাব না পেয়ে পরে তিনি রিট করেন।
কোটা অনুযায়ী এ বছর বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজে যেতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার এবং বাকিরা যাবেন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়। সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যেতে গেল রোববার পর্যন্ত ৮০ হাজারেরও বেশি ব্যক্তি নিবন্ধন করেছেন।