সেই মুক্তাকে চাকরি দিলেন প্রতিমন্ত্রী পলক!
সাদাকালো নিউজ
মুক্তা সুলতানা। কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদি উপজেলার বনগ্রামের বাসিন্দা। ইডেন মহিলা কলেজ থেকে ২০১৯ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তবে চাকির না পেয়ে হতাশা গ্রাস করেছিলো তাকে। আর সেই হতাশায় ফেসবুক লাইভে এসে ২৭ বছরের অর্জিত সব একাডেমিক সার্টিফিকেট পুড়িয়ে ফেলেন তিনি।
মুক্তার সেই লাইভ ভিডিও ছড়িয়ে পরে সোশ্যাল মিডিয়ায়। বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকের। পরে প্রতিমন্ত্রী মুক্তার সঙ্গে নিজে যোগাযোগ করেন। তাকে তার দপ্তরে আসার জন্য অনুরোধ করেন।
মুক্তার সাথে আলোচনা করার পর প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে চাকরির নিয়োগ পত্র তুলে দেন প্রতিমন্ত্রী পলক। এখন থেকে মুক্তা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীন ‘এস্টাবলিশমেন্ট অব সিকিউরড ইমেইল ফর গভর্নমেন্ট অ্যান্ড ডিজিটাল লিটারেসি সেন্টার’ প্রজেক্টে ‘কন্টেন্ট ডেভেলপমেন্ট এন্ড সোশ্যাল কমিউনিকেশন অফিসার’ হিসেবে কাজ করবেন। তার বেতন ৩৫ হাজার টাকা।
চাকরি পেয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় মুক্তা জানান, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সহানুভূতির কারণে তিনি চাকরি পেয়েছেন। মন্ত্রীর প্রতি তিনি কৃতজ্ঞ। একজন প্রতিমন্ত্রী ফেসবুক ভিডিও দেখে নাগরিকের ক্ষোভ-দুঃখ হতাশা দূর করতে তাকে খুঁজে এনে ব্যক্তিগত উদ্যোগে চাকরির ব্যবস্থা করবেন সেটা তিনি এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না।
প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জানান, দেশের মেধাবী তরুণ-তরুণীরা যেন হতাশাগ্রস্ত না হয় এবং আত্মবিশ্বাসের সাথে এগিয়ে যেতে পারে, সেজন্য আইসিটি বিভাগ থেকে প্রশিক্ষণসহ বিভিন্নভাবে সহায়তা দেয়া হচ্ছে। যথাযথ শিক্ষাগ্রহণ করলে বাংলাদেশে কোনো শিক্ষিত তরুণ-তরুণী বেকার থাকবে না। আইসিটি বিভাগ তরুণ-তরুণীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছে, ভবিষ্যতেও করবে।
২৩শে মে ইডেন কলেজের সামনে মুক্তা তার নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে লাইভে আসেন। চাকরির বয়স বাড়ানোর আন্দোলন করেও মিলছে না কোনো সুখবর। তাই ক্ষোভে নিজের সব সার্টিফিকেট পুড়িয়ে ফেলেন মুক্তা।
মুক্তার সেই লাইভে দেখা যায়, তিনি তার মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতোকোত্তরের সার্টিফিকেট পুড়িয়ে ফেলেন। পুড়িয়ে ফেলার আগে তিনি দেখান, তার স্নাতক পরীক্ষা ২০১৩ সালে এবং স্নাতকোত্তর পরীক্ষা ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০১৫ সালে তার পরীক্ষা হলেও ২০১৯ সালে তার সার্টিফিকেট ইস্যু হয়। ২০১৫ সালে পরীক্ষা দিয়েও তিনি ২০১৯ সাল পর্যন্ত ৪ বছর কোথাও আবেদন করতে পারেননি।
লাইভে আক্ষেপের সুরে মুক্তা সুলতানা জানান, যে সার্টিফিকেট দিয়ে সরকারি চাকরিতে আবেদন করা যায় না, বেসরকারি চাকরিতেও আবেদন করা যায় না সে সার্টিফিকেট রেখে কী লাভ। অবশেষে সার্টিফিকেট পুড়িয়ে সরকারি চাকরি পেলেন এই ইডেন ছাত্রী!