সুইজারল্যান্ডে সম্মেহেরের জীবন কেমন?
রাকিবুল ইসলাম
স্বজনদের হারিয়ে ৪৫ বছর কাটিয়েছেন সুদূর সুইজারল্যান্ডে। ভুলে গিয়েছেন মায়ের মুখ। এত ছোট বয়সে বিদেশে নিয়ে যাওয়া হয় যে, বাংলা ভাষা রপ্ত করা হয়নি তাঁর। তবুও প্রায় পৌনে চার যুগ পর ফিরেছেন দেশে, পরিবারের কাছে। মায়ের বুকে।
বলছি ৪৫ বছর আগে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে হারিয়ে যাওয়া সন্তান সম্মেহের বেগমের কথা। গত মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে স্বামী জেন মার্ককে নিয়ে রাজধানীর শেখেরটেকে মা মাফিয়া বেগমের কাছে ফেরেন ছোট মেয়ে সম্মেহের।
কুলসুমের বয়স এখন ৫০-এর কাছাকাছি। সম্মেহের বয়সে কুলসুমের চেয়ে খানিকটা ছোট। বড় বোন মায়ের ভাষা বাংলা কিছগুটা রপ্ত করতে পারলেও, সম্মেহের পারেন না। এমনকি ইংরেজিও বলতে পারেন না তিনি। কথা বলেন কেবল ফ্রেঞ্চ ভাষায়।
সুইজারল্যান্ডের বাসিন্দা জেন মার্ককে বিয়ে করেছেন সম্মেহের। বিদেশে গিয়ে নাম পাল্টে হয়েছেন সুজান সুজি। বর্তমানে পেশায় একজন নার্স প্রশিক্ষক তিনি। সুইজারল্যান্ডে যে পরিবারে বেড়ে উঠেছেন সেখানে সম্মেহেরেরা চার ভাই-বোন। তাঁদের মধ্যে তিন বোন, এক ভাই। কুলসুম-সম্মেহেরকে ছাড়াও তাঁদের পালক বাবা-মা ভিয়েতনাম থেকে আরও দুইজনকে দত্তক নেন।
সম্মেহের-জেন সম্পতির ঘরে রয়েছে দুই ছেলে। বড় ছেলে ম্যাকজিমির বয়স ১৭ বছর। ছোট ছেলে জুলিসের বয়স ১৩ বছর। তারা দুজনই এখন ছাত্র।
এদিকে, বিদেশে বিলাসি জীবন থাকলেও, এতদিন শূণ্যতায় ভরা ছিল সম্মেহেরের মন। স্বজনদের থেকে দূরে থাকার হাহাকার তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছিল। দীর্ঘ সময় পরিবারের শূন্যতা অনুভব করে বারবার স্মৃতিতে শুধু খুঁজে বেড়িয়েছেন মাকে। অবশ্য দেরিতে হলেও ৪৫ বছর পর মায়ের বুকে ফিরেছেন সম্মেহের।