সিলেট-৪ আসনে কারা লড়বেন ভোটের মাঠে?
সাদাকালো নিউজ
কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর নিয়ে গঠিত সিলেট-৪ আসন। আয়তনের দিক থেকে তিনটি উপজেলা নিয়ে গঠিত দেশের অন্যতম বড় নির্বাচনী এলাকা এটি। জাফলং, বিছানাকান্দি, পান্তমাই, লালখাল, শ্রীপুর ও ভোলাগঞ্জসহ সিলেট বিভাগের বেশিরভাগ পর্যটন কেন্দ্রের অবস্থানও এই আসনেই। এছাড়া সরকারের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয়ের উৎস পাথর কোয়ারির জন্য সবার বিশেষ নজর থাকে এই আসনের দিকেই।
১৯৭৩ সালে সিলেট-৪ আসনে নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের হাবিবুর রহমান। ১৯৭৯ সালে নির্বাচিত হন বিএনপি প্রার্থী নাজিম কামরান চৌধুরী। ১৯৮৬ সালে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ইমরান আহমদ নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালে পুনরায় ইমরান আহমদ নির্বাচিত হন। তবে ১৯৯৬ সালে আসনটি চলে যায় বিএনপির হাতে। নির্বাচিত হন বিএনপির প্রয়াত অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম সাইফুর রহমান। ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপির দিলদার হোসেন সেলিম নির্বাচিত হন। এরপর ২০০৮ ও ২০১৪ সালে আবারও আওয়ামী লীগের ইমরান আহমেদ নির্বাচিত হন।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন ঘিরে সিলেট-৪ আসনটিতে এবার বিএনপি’র প্রার্থী একাধিক। আর ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাত্র দুজন। আবার জাতীয় পার্টিও ভাগ বসাতে চাই আসনটিতে।
সিলেট-৪ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইমরান আহমেদ। ডাক, টেলিযোগাযোগ, তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির এই সভাপতি সিলেট-৪ আসনের ৬ বারের এমপি। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিএনপি’র কোনো প্রার্থী ছিল না। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহমদ।
জানা গেছে, ভোলাগঞ্জ, জাফলং, বিছনাকান্দি, শাহ আরপিন, উৎমাছড়া ও শ্রীপুর পাথর কোয়ারির অবস্থান এই সংসদীয় আসনে। এসব কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলন ও টোল আদায় নিয়ে স্থানীয় এমপিকে থাকতে হয় বেকায়দায়। সবকটি কোয়ারিতে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে নিজ দলের নেতাকর্মীরা বিভক্ত।
বিএনপি নির্বাচনে এলে এ আসনে বর্তমান এমপি ইমরান আহমেদের জয় পাওয়া অনেকটা চ্যালেঞ্জিং হবে বলে ধারণা ভোটারদের। গেল নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া ফারুক আহমেদও এখানে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী। অপরদিকে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী আছেন বেশ কয়েকজন।
বিএনপির প্রার্থীদের মধ্যে আছেন- দলের কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক এমপি দিলদার হোসেন সেলিম। গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের পর পর দুই বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও সিলেট জেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি আব্দুল হেকিম চৌধুরী। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট কামরুজ্জামান সেলিম ও সিলেট জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক ও দলের কেন্দ্রীয় সহ-স্বেচ্ছাসেবক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামসুজ্জামানও এ আসনে বিএনপি’র প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
এদিকে দীর্ঘদিন ধরে মাঠে কাজ করছেন সিলেট জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক ও দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য তাজ রহমান। এ আসনে তিনিও জাপারও প্রার্থী হতে চান। এ লক্ষ্যে তিনি বিভিন্ন কর্মসূচি পালন শুরু করেছেন। সিলেট-৪ জাতীয় সংসদের ২৩২ নম্বর আসন। এ আসনে মোট ভোটার তিন লাখ ৫৮ হাজার ৪৭৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ এক লাখ ৮৪ হাজার ৬২ জন ও নারী ভোটার এক লাখ ৭৪ হাজার ৪১৭ জন।