রাজনৈতিক পিতার ‘যোগ্য সন্তান’ আইভী!
নাফিজা আক্তার
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রভাবশালী সাময়কী দ্য এশিয়ানের চোখে এশিয়ার সব থেকে ক্ষমতাধর মেয়রদের মধ্যে অন্যতম ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) নির্বাচনে আবারও লড়াইয়ে নেমেছেন তিনি। বাংলাদেশের সিটি করপোরেশনগুলোর মধ্যে নির্বাচিত প্রথম নারী মেয়রও তিনি।
জানা গেছে, ১৯৬৬ সালের ৬ জুন নারায়ণগঞ্জের একটি রাজনৈতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন সেলিনা হায়াৎ আইভী। মা মমতাজ বেগম ও পিতা সাবেক পৌর চেয়ারম্যান আলী আহাম্মদ চুনকা ছিলেন নারায়ণগঞ্জ শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি। স্বাধীনতার পর জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থেকে ১৯৭৪ এবং ১৯৭৭ সালে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন আইভির বাবা।
চুনকা পরিবারের পাঁচ সন্তানের মধ্যে ডা. আইভী প্রথম। তিনি দেওভোগ আখড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিক্ষা জীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি নারায়ণগঞ্জ প্রিপারেটরী স্কুলে ভর্তি হন এবং ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। এরপর তিনি মর্গ্যান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন।
১৯৭৯ সালে ট্যালেন্টপুলে জুনিয়র স্কলারশিপ পান এবং ১৯৮২ সালে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় স্টারমার্কসহ উত্তীর্ণ হন আইভী। এরপর তিনি ১৯৮৫ সালে রাশিয়ান সরকারের স্কলারশিপ নিয়ে চিকিৎসা বিজ্ঞানে শিক্ষা গ্রহণের জন্য ওডেসা পিরাগোব মেডিকেল ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন এবং ১৯৯২ সালে মেডিসিন চিকিৎসক ডিগ্রি লাভ করেন।
ডা. আইভী তার শিক্ষা জীবনের পর ১৯৯৩-৯৪ সালে মিডফোর্ট হাসপাতালে এবং ১৯৯৪-৯৫ সালে নারায়ণগঞ্জ ২০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে অনারারি চিকিৎসক হিসেবে কাজ করেন। স্কুল ও কলেজ জীবন থেকেই বাবার সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতেন আইভী। ১৯৯৩ সালে তিনি নারায়ণগঞ্জ শহর আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০০৩ সালের ৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচনে ভোটে জয়লাভ করে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার প্রথম মহিলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন আইভী। এরপর নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা সিটি করপোরেশন হলে, তাতেও তিনি নির্বাচিত হয়ে মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ শহর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির দায়িত্বে আছেন আইভী। তিনি আলী আহাম্মদ চুনকা ফাউন্ডেশন এবং নারায়ণগঞ্জ হার্ট ফাউন্ডেশন-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং তিনি স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ)-এর নারায়ণগঞ্জ জেলার আহ্বায়কের দায়িত্বে আছেন। এছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত আছেন আইভী।
গতবারের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়েও কেবল জনপ্রিয়তার ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জ নগরের সর্বোচ্চ অধিকর্তার মুকুট জয় করে নিয়েছিলেন, দলের অভ্যন্তরীণ সব কোন্দলকে ডিঙিয়েই। ১৬ জানুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন আইভী।