যে কারণে বন্ধ হয় দীর্ঘস্থায়ী চুমুর বিশ্ব রেকর্ড
সাদাকালো নিউজ
বিশ্বের অন্যান্য অনেক অদ্ভুত রেকর্ডের মতো একসময় দীর্ঘস্থায়ী চুমুর বিশ্ব রেকর্ড রাখত গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষ। তবে ২০১৩ সাল থেকে প্রতিষ্ঠানটি এ রেকর্ড রাখা বন্ধ করে। কেন এ সিদ্ধান্ত এসেছিল?
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দীর্ঘস্থায়ী চুমুর রেকর্ড গ্রহণের ক্ষেত্রে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষের দেওয়া শর্তগুলো ছিল অনেক কঠিন। ফলে ক্রমশ বিপজ্জনক হয়ে উঠছিল এই প্রতিযোগিতা। এ রেকর্ড করতে গিয়ে অনেকে অসুস্থও হন। তাদের হাসপাতালে নেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
শর্তগুলোর মধ্যে প্রথমটি ছিল চুমু হতে হবে অবিরত এবং দুজনের ঠোঁট আলাদা হওয়া যাবে না। ঠোঁট আলাদা হলেই প্রতিযোগিতা থেকে বাদ। যদিও ছোট পাইপ দিয়ে তরল নেওয়ার সুযোগ ছিল।
অন্য শর্তগুলো হলো চুমুর পুরো সময় প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া যুগলকে জেগে থাকতে হবে। থাকতে হবে দাঁড়িয়ে এবং কোনো কিছুতে হেলান বা কোনো কিছুর সাহায্য নিয়ে দাঁড়ানো যাবে না। চুমুর মাঝখানে কোনো বিরতি থাকবে না। টয়লেটে যেতে পারবেন, তবে সেটা চুমুরত অবস্থাতেই।
সেই কারণেই দীর্ঘক্ষণ ধরে চুম্বনের মাধ্যমে বিশ্ব রেকর্ড গড়ার প্রতিযোগিতা প্রায় ১০ বছর আগেই বন্ধ করে দেয় গিনেস কর্তৃপক্ষ। এর ব্যাখ্যায় গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষ বলেছে, চুমুর মধ্যে বিরতি না থাকা ও পাল্লা দিয়ে রেকর্ড ভাঙার প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ায় অংশগ্রহণকারীদের সাইকোসিসের মতো নিদ্রাহীনতাবিষয়ক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরির প্রবণতাও বাড়ছিল।
দীর্ঘক্ষণ চুমু খেয়ে মাশুল দিতে হয়েছে যাদের-
১৯৯৯ সালে বিশ্ব রেকর্ড গড়েছিলেন ইজরায়েলের কারমিত জুবেরা এবং ড্রোর অরপাজ। ৩০ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট ধরে চুম্বনরত অবস্থায় ছিলেন তারা। এর ফলে প্রায় অচেতন হয়ে গিয়েছিলেন এই দু’জন। প্রতিযোগিতা জিতলেও তাদের নিয়ে হাসপাতালে ছুটতে হয়েছিল। সেখানে চরম ক্লান্তির জন্য চিকিৎসা নিতে হয়েছিল ইজরায়েলের এই যুগলের।
২০০৪ সালে ইতালির ৩৭ বছরের যুবক আন্দ্রেয়া সার্টি নিজের বান্ধবী আনা চেনকে নিয়ে যোগ দিয়েছিলেন এই প্রতিযোগিতায়। ৩১ ঘণ্টা ১৮ মিনিট ধরে একে অন্যের সঙ্গে চুম্বনরত ছিলেন তারা। প্রতিযোগিতা শেষে অক্সিজেন দিতে হয়েছিল যুগলকে।
তবে সবচেয়ে মর্মান্তিক পরিণতি হয়েছিল ২০১১ সালের প্রতিযোগিতায়। চুম্বন শেষ হওয়ার মাত্র ৩০ মিনিটের মধ্যেই মৃত্যু হয়েছিল এক নারীর।
দীর্ঘতম চুম্বনের সর্বশেষ বিশ্ব রেকর্ডটি হয়েছিল ২০১৩ সালে। তাদের চুম্বন ৫৮ ঘণ্টা ৩৫ মিনিট স্থায়ী ছিল। থাইল্যান্ডের দম্পতি এক্কাচাই এবং লাকসানা তিরানারাত এই রেকর্ডটি গড়েন। এই দম্পতি ২০১১ সালের প্রতিযোগিতাতেও জয়লাভ করেছিলেন।