কেন বারবার ডুবছে সিলেট-সুনামগঞ্জ?
সাদাকালো নিউজ
বন্যায় ভাসছে সিলেট-সুনামগঞ্জ। রেলওয়ে স্টেশন, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, বাসাবাড়ি, অফিস আদালত, বিমানবন্দর সর্বত্র শুধু পানি আর পানি। ৬০ লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দি। গত দুই মাসের মধ্যে তিন দফা বন্যার কবলে পড়েছে সিলেট-সুনামগঞ্জ। তবে এবারের বন্যা তীব্র আকার ধারণ করেছে। সিলেটে কেন এতো ঘন ঘন বন্যা? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাচ্ছে না মানুষ।
পরিবেশ সংগঠকেরা বলছেন, অতিবৃষ্টির কারণেই এই বন্যা। তবে এর বাইরেও বেশ কিছু কারণ আছে। সিলেটের প্রতিটি নদ-নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে নাব্যতা হারিয়েছে। হাওরে অপরিকল্পিতভাবে বাঁধ, রাস্তা ও স্লুইসগেট নির্মাণ করা হয়েছে। নির্বিচারে কাটা হচ্ছে পাহাড়-টিলা। মূলত, বন্যা পরিস্থিতির জন্য মোটাদাগে এসব কারণই প্রধানত দায়ী।
নদী রক্ষা কমিশন মনে করে, জলাশয় উদ্ধার, নদীনালা দখল ও দূষণমুক্ত করে খনন করলে সিলেট অঞ্চলের বন্যার তীব্রতা কিছুটা কমতে পারে। অন্যদিকে আবার ভারতের চেরাপুঞ্জি ও আসামে ১২২ বছরের রেকর্ড বৃষ্টিপাতকে বন্যার কারণ বলে মনে করছেন অনেকে। কারণ সুনামগঞ্জ জেলার সীমান্ত থেকেই ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জি এলাকার শুরু। ফলে সেখানকার পানি সরাসরি বাংলাদেশের হাওরে এসে মেশে। ভৈরব বা মেঘনা নদী হয়ে সাগরে চলে যায়।
কিন্তু এবারের বন্যার পেছনে হঠাৎ উজান থেকে আসা অতিরিক্ত পানি বের হতে না পারা প্রধান কারণ বলে মনে করছেন গবেষকরা। এজন্য তাঁরা নদীর নাব্যতা কমে যাওয়াকে দায়ী করছেন। গবেষকরা বলছেন, প্রতি বছর উজান থেকে পানির সাথে পলি আর পাথর নেমে আসে। সেটা এসে বাংলাদেশের অংশে নদীর তলদেশ ভরে ফেলে। নদীর পানি বহনের ক্ষমতা কমে যায়। তখন এই নদীতে বেশি পানি আসলে সেটা উপচে আশেপাশের এলাকা ভাসিয়ে ফেলে। নদীর নাব্যতা নষ্টের জন্য ভারত অংশে অপরিকল্পিত পাথর উত্তোলনকে দুষছেন তাঁরা।