ভোটের শেষের দিকে বিপাকে জাহাঙ্গীর!
সাদাকালো নিউজ
ভাগ্য কিছুতেই প্রসন্ন হচ্ছে না গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের। একের পর এক দুঃসংবাদ শুনতে হচ্ছে তাকে। মনোনয়ন বাতিল, দল থেকে স্থায়ী বহিষ্কার আর স্ত্রীর কাছ থেকে বিচ্ছেদের নোটিশ পাবার পর জাহাঙ্গীর আলমকে এবার দুদকে তলব করা হয়েছে।
উন্নয়ন প্রকল্পে টাকা আত্মসাৎ ও ভুয়া ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে। নোটিশের মাধ্যমে আগামী ২০ ও ২১ মে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে হাজির হয়ে বক্তব্য দিতে বলা হয়েছে তাকে।
এর আগে ঋণ খেলাপি হওয়ায় চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল জাহাঙ্গীরের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। দিন দুয়েক আগে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয় গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের এই সাবেক সাধারণ সম্পাদককে। দলের সিদ্ধান্ত না মেনে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মনোনয়ন জমা দেয়ার পর আওয়ামী লীগের সম্পাদক মন্ডলী জাহাঙ্গীরকে দল থেকে আজীবনের জন্য বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
কেন্দ্রীয় নেতারা জানান, এর আগে দলের ক্ষমা পাওয়ার পরও জাহাঙ্গীর দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন। নিজের মনোনয়ন বাতিল হলেও জাহাঙ্গীর তার মায়ের জন্য নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। এছাড়া তিনি দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন।
রাজনীতিতে সংকটে পরার মাঝেই জাহাঙ্গীরকে বিচ্ছেদের নোটিশ পাঠান তার স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা জয়ী। যা বর্তমানে টক অব দ্যা কান্ট্রিতে পরিণত হয়েছে।
বিচ্ছেদের নোটিশে দেখা যায়, মানসিক, পারিবারিক অশান্তি এবং নিয়মিত ভরণ পোষণ দিতেন না জাহাঙ্গীর। ফলে সংসার জীবনে অশান্তি শুরু হয়। এ কারণে নিকাহ নামার ১৮ নম্বর ধারা অনুযায়ী জাহাঙ্গীরকে স্বেচ্ছায়, স্বজ্ঞানে ও সুস্থ মস্তিস্কে বিচ্ছেদের নোটিশ পাঠান তিনি।
মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের সংখ্যা ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে জাহাঙ্গীরকে ২০২১ সালের নভেম্বরে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়। একিসঙ্গে মেয়র পদ থেকেও তাকে সরিয়ে দেয়া হয়। পরবর্তীতে সাধারণ ক্ষমা চাওয়ায় ফের জাহাঙ্গীরকে দলে নেয় আওয়ামী লীগ।
দীর্ঘ ৬ বছর গাজীপুর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন জাহাঙ্গীর আলম। ২০১৮ সালে নৌকা প্রতীক পান তিনি। আর সেই নৌকা নিয়ে সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন। তবে এবার নৌকা না পেয়ে তার মা জায়েদা খাতুনকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন। তবে গুঞ্জন উঠেছে দল থেকে বহিস্কার, স্ত্রী বিচ্ছেদ, দুদকে তলব, সব মিলিয়ে নির্বাচনের আগেই হয়তো হাজতে যেতে হতে পারে জাহাঙ্গীর আলমকে।