ব্যাংকের ভেতরে ২ আনসার সদস্যের সঙ্গে আসলে কি ঘটেছিলো সেদিন রাতে ?
সাদাকালো নিউজ
তারা দুজনেই নাকি খুব ভালো লোক ছিলেন। কারও সঙ্গে কখনো কোনো ঝামেলায় জড়াননি। এমনকি তাদের কাউকে কোনো ধরনের না সেব্য পণ্য সেবন করতেও দেখেননি স্থানীয়রা। সব সময় সবার সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলতেন।
বলছি, নরসিংদীর অগ্রণী ব্যাংকের দুই আনসার সদস্যের কথা। এই ব্যাংকটির ভেতর থেকেই তাদের নিথর দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তারা হলেন- তৌহিদুল আলম ও রঞ্জু মিয়া। দুজনেই ব্যাংকটির রাত্রিকালীন নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন।
তবে ঠিক কি কারণে তারা না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন তা নিশ্চিত হওয়া যায় নি। কেউ কি তাদের শেষ করে দিয়েছে, নাকি নিজেই নিজেদের শেষ করে দিয়েছেন সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেনি স্থানীয় পুলিশও।
ঘটনার বিষয়ে নরসিংদীর পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম জানান, দুই আনসার সদস্যের ঘটনাটি রহস্যজনক। অনেকগুলো প্রশ্ন সামনে রেখে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর সঠিক কারণ জানা যাবে। দ্রুততম সময়ে এই ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা হবে।
ব্যাংক কর্মকর্তাদের সূত্রে জানা গেছে, ওই দুই আনসার সদস্যের দায়িত্ব ছিল প্রতি রাতে কার্যালয়ের ভেতরে অবস্থান করে পাহারা দেয়া। এ জন্যই তাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। তাদের মধ্যে তৌহিদুল ৬ মাস ও রঞ্জু ৪ মাস ধরে ব্যাংকটিতে কাজ করছিলেন।
ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী, পর্যায়ক্রমে একজন কার্যালয়টির ভেতরে হাঁটাহাঁটি করবেন, এ সময় অন্যজন বিশ্রাম নেবেন। এ জন্য ব্যাংকটির স্টোররুমে একটি চৌকি ছিল। ওই দুই আনসার সদস্য ব্যাংকটির ভেতরের রান্নাঘরে নিজেরাই রান্না করে খেতেন।
এদিকে ব্যাংকের ভেতরে থাকা একটি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ব্যাংকের দুই গেটে তালা দিয়ে বাইরে যান তারা। সন্ধ্যা ৭টার পর কাঁচাবাজারভর্তি একটি ব্যাগ নিয়ে আবার তারা ব্যাংকে ঢোকেন। এরপর রান্না ঘরে চলে যান।
অল্প সময়ের মধ্যে সেখান থেকে বেরিয়ে কার্যালয়ের ভেতরেই ঘণ্টাখানেক অস্থিরভাবে পায়চারি করেন তারা। পরে তারা তাদের কক্ষে ঢুকে যান। এরপর আর বের হননি। ব্যাংকের কলাপসিবল গেটের তালা ভেঙে সেই কক্ষ থেকেই দুজনের দেহ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ বলছে, তাদের দুজনের শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে মুখে ফেনা ছিল। এ কারণে ধারণা করা হচ্ছে, খাদ্যে বিষক্রিয়ায় পরপারে পাড়ি দিয়েছেন তারা। তবে তারা শেষ কোথায় কী খাবার খেয়েছিলেন, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।