বিস্ময়কর এক মসজিদ; যেখানে আজান ও নামাজের দায়িত্ব হিন্দুদের
সদাকালো নিউজ
ছোট্ট গ্রাম মারি। যেখানে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ২০০ বছরের পুরোনো এক মসজিদ। অথচ মসজিদের আশেপাশে তো দূরের কথা গোটা গ্রামে নেই কোনো মুসলিম পরিবার। কিন্তু তাতে কি, মসজিদের খেদমতের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন স্থানীয় হিন্দুরা।
জানা গেছে, মসজিদটির দেয়ালে রং করা, মসজিদ চত্বর পরিস্কার-পরিচ্ছন্নও করেন তারা। সেই সঙ্গে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আজানও দেন স্থানীয় হিন্দুরায়। নজিরবিহীন এই ঘটনার সাক্ষী ভারতের বিহারের নালন্দার ছোট্ট গ্রামটি। যেখানে শতশত হিন্দু পরিবারের মাঝে মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে আছে মসজিদটি। কখনও যে মসজিদটির যত্ন কিংবা অবহেলা হয়নি তা অবকাঠামো দেখলেই বুঝা যায়।
ধারণা করা হয়, প্রায় ২০০ বছর আগে মারি গ্রামটিতে মুসলমানদের বসতি ছিলো। সেই সময়টাতে নির্মাণ করা হয় মসজিদটি। তবে ধীরে ধীরে মুসলিমদের সংখ্যা কমতে থাকে গ্রামটিতে। কালের পরিক্রমায় এখন মুসলিম শূন্য গ্রামটি। কিন্তু হিন্দুরায় এখন নিজেদের বাড়ি-ঘরের মতো পরম মমতায় মসজিদটি আগলে রেখেছেন।
বলা হচ্ছে, মুসলিম না থাকায় একটা সময় পরিত্যক্ত হয়ে পড়েছিলো মসজিদটি। গ্রামের মানুষদের জন্য এটি অকল্যাণ বয়ে আনবে এই বিশ্বাসে হিন্দুরায় মসজিদটির সংস্কার ও দেখভালের দায়িত্ব নেন। বর্তমানে মসজিদটিতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের জন্য রেকর্ড করা আজান বাজানো হয়। এমনকি নামাজও পড়েন হিন্দুরায়।
আজান ও নামাজ ছাড়াও নিজেদের যেকোনো সমস্যায় মসজিদের শরণাপন্ন হন মারি গ্রামের মানুষেরা। ভালো কিংবা খারাপ যেটাই হোক না কেন মসজিদের পাশাপাশি মন্দিরেও পূজা করতে দেখা যায় তাদের। মুসলিম শূন্য গ্রামটিতে এভাবেই প্রায় ৮০ বছর ধরে যথাযথ মর্যাদায় টিকে আছে মসজিদটি।
ভারতের বিহারের মারি গ্রামটির ধর্মীয় সম্প্রীতির এমন নজির ভারতবাসীকে অবাক করেছে। এমন খবর প্রকাশের পর থেকেই সেই গ্রাম দেখতে ছুটেছেন অনেকেই।
মারি গ্রামের মতো কিছুদিন আগে লুধিয়ানাতেও এমনি একটি ঘটনা সামনে এসেছিল। যেখানে একটি মসজিদের দেখাশোনার সব দায়-দায়িত্ব পালন করে আসছেন স্থানীয় হিন্দুরা।
জানা যায়, দেশভাগের সময় লুধিয়ানা হেডন বেটের মুসলিমরা দেশ ছেড়ে চলে যায়। লুধিয়ানায় থাকা মসজিদের দেখাশোনার জন্য কোনো মুসলিম অবশিষ্ট না থাকায় অবশেষে স্থানীয় হিন্দুরায় পালাক্রমে মসজিদ দেখাশোনার দায়িত্ব নেন।