বর্ণাঢ্য আয়োজনে জেএমআই গ্রুপ এর বিশ্ব শান্তি দিবস উদযাপন
সাদাকালো নিউজ
বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে রাজধানীতে পালিত হয়েছে জাতিসংঘ ঘোষিত ‘বিশ্ব শান্তি দিবস-২০২২’। ঐক্যবদ্ধ শান্তি প্রতিষ্ঠায় ‘End Racism. Build Peace’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালন করেছে জেএমআই গ্রুপ।
বুধবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের ‘আব্দুস সালাম’ মিলনায়তনে আয়োজিত একটি আলোচনা সভায় বক্তারা জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানবতার সুখ শান্তি অর্জনে জনমত সৃষ্টির লক্ষ্যে বিশ্ব শান্তি দিবস পালনের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
সভাপতির বক্তব্যে জেএমআই গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুর রাজ্জাক বলেন, “কোভিড-১৯ এর কারণে সারা বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দার সৃষ্টি হয়েছিল। সেই বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আবার শুরু হয়েছে ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধ। এই যুদ্ধের ফলে সুদূরে থেকেও আমরা ক্ষতির শিকার হচ্ছি। গত ৪-৫ মাসের ব্যবধানে পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে আন্তর্জাতিক পরিবহন খরচ ৬ থেকে ৭ গুণ বেড়েছে। পাশাপাশি তিন মাস আগে ৮৬ টাকা প্রতি ডলারে খোলা এলসির বিপরীতে এখন পেমেন্ট দিতে হচ্ছে ১১০ টাকার ওপরে। ফলে এদেশের ব্যবসায়ীরা প্রতিনিয়ত বড় অঙ্কের লোকসান গুণতে বাধ্য হচ্ছেন। এ অবস্থায় বিশ্ব শান্তির জন্য আমরা চাই, এই মুহূর্ত থেকে যুদ্ধ বন্ধ হোক। আলোচনাই হোক সকল সমস্যার সমাধান।”
মো. আবদুর রাজ্জাক আরও বলেন, “গত এক যুগের বেশি সময় ধরে জেএমআই গ্রুপ বিশ্ব শান্তি দিবস পালন করে আসছে। আমরা চাই এই একটি দিনের অনুশীলনকে পর্যায়ক্রমে প্রতিটি দিন তথা ৩৬৫ দিন-এর অনুশীলনে পরিণত করে পরিপূর্ণভাবে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠা হোক। আসুন, হাতে হাত মিলিয়ে, উদার মানসিকতা নিয়ে নির্যাতিতদের পাশে দাঁড়িয়ে আমরা শান্তি এবং নিরাপত্তার মৌলিক অধিকারসমূহকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হই। বর্ণবাদমুক্ত পৃথিবী গড়তে আমাদের বিজয় অবশ্যম্ভাবী।”
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পিস এন্ড কনফ্লিক্ট স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. তৌহিদুল ইসলাম এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পিস এন্ড কনফ্লিক্ট স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান সাইফুদ্দিন আহমেদ।
সমাপনী বক্তব্যে জেএমআই গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. জাবেদ ইকবাল পাঠান বলেন, “জেএমআই পরিবারের প্রতিটি সদস্য জাতিসংঘের শান্তি দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয়কে সমুন্নত রাখতে বদ্ধ পরিকর। বর্ণবাদ মোকাবেলায় তাই আমাদের আজকের এই প্রচেষ্টা সময়োপযোগী বলে আমি মনে করি।”
জেএমআই গ্রুপের উপ-মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আব্দুল্লাহ আল ফারুকীর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন নিপ্রো জেএমআই ফার্মার পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান পাটোয়ারী, এবং নিপ্রো জেএমআই মেডিকেল লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক কুনিও (কেনি) তাকামিদো।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন- জেএমআই সিরিঞ্জেস অ্যান্ড মেডিকেল ডিভাইসেস লিমিটেডের পরিচালক (অর্থ) হিরোশি সাইতো, জেএমআই গ্রুপের উপদেষ্টা (প্রশাসন) এমএ রাজেক, জেএমআই বিল্ডার্স অ্যান্ড কন্সট্রাকশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন আহমেদ, জেএমআই গ্রুপের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম, জেএমআই সিরিঞ্জেস অ্যান্ড মেডিকেল ডিভাইসেস লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক অভিজিৎ পাল, এবং জেএমআই গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক (মানবসম্পদ) মোহাম্মদ মাসউদ হাসান।
আলোচনা সভা শেষে প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে বেলুন ও সাদা পায়রা উড়িয়ে বিশ্ব শান্তি দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত শোভাযাত্রার উদ্বোধন ঘোষণা করেন জেএমআই গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুর রাজ্জাক। শোভাযাত্রাটি প্রেস ক্লাব থেকে শুরু হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দোয়েল চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।
উল্লেখ্য, বিদেশিদের সাথে যৌথ বিনিয়োগে প্রতিষ্ঠিত ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম উৎপাদন ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান জেএমআই গ্রুপ। ১৯৯৯ সালে যাত্রা শুরু করা জেএমআই গ্রুপে বর্তমানে রয়েছে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, তুরষ্ক ও থাইল্যান্ডের যৌথ বিনিয়োগ। জেএমআই গ্রুপের ৪২টি প্রতিষ্ঠানে ৮ হাজারেরও বেশি কর্মী কর্মরত আছেন। নিপ্রো জেএমআই যৌথ বিনিয়োগে দেশে বিশ্বমানের বিভিন্ন জীবনরক্ষাকারী চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং ওষুধ উৎপাদন ও বিপণনের মাধ্যমে দেশ-বিদেশে স্বাস্থ্য সেবা দিচ্ছে জেএমআই। পাশাপাশি দেশজুড়ে পরিবেশবান্ধব জ্বালানি চাহিদা পূরণে তরল পেট্রলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) আমদানি করে বাজারজাত করছে জেএমআই।
একটি যুদ্ধবিহীন বিশ্ব প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯৮১ সাল থেকে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন শুরুর প্রথম দিনটিকে ‘বিশ্ব শান্তি দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে গৃহীত প্রস্তাব অনুসারে প্রতি বছর সেপ্টেম্বর মাসের ‘তৃতীয় মঙ্গলবার’ এই দিবসটি পালিত হয়ে আসলেও, ২০০২ সাল থেকে তা ২১ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করে সারা বিশ্বে অতি গুরুত্বের সঙ্গে প্রতি বছর পালিত হয়ে আসছে ‘বিশ্ব শান্তি দিবস’।