প্রায় প্রস্তুত জাতীয় ঈদগাহ মাঠ
সাদাকালো নিউজ
দরজায় কড়া নাড়ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২২ বা ২৩ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে মুসলমানদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। প্রতি বছর ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে। এবার প্রধান জামাত হবে সকাল সাড়ে ৮টায়।
ঈদের প্রধান জামাতকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যেই সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। এখন চলছে শেষ মুহূর্তের ঘষামাজা।
বুধবার (১৯ এপ্রিল) সরেজমিনে জাতীয় ঈদগাহ ঘুরে দেখা গেছে, শ্রমিকরা শেষ মুহুর্তের জন্য ব্যস্ত সময় পার করছেন। একপাশে বসে পাহারা দিচ্ছে পুলিশ সদস্যরা।
জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের বিশাল এলাকাজুড়ে প্যান্ডেল তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। রোদ বা বৃষ্টি থেকে রক্ষায় জন্য ওপরে দেওয়া হয়েছে ত্রিপলের সামিয়ানা। মাটির ওপরে বসার জন্য বিশেষ পর্দা লাগানো হবে চাঁদরাতে। এছাড়াও ভেতরে নামাজের জায়গা, বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে। সাদা কাপড় দিয়ে সজ্জিত করা হয়েছে মাঠের ভেতর। এছাড়াও মাঠের ভেতরের অংশেও মাটি ঢেলে সমতল করা হয়েছে।
এবারও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ঈদগাহ মাঠ প্রস্তুতে টেন্ডার পেয়েছে ‘পিয়ারো সরদার অ্যান্ড সন্স’। প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক মোজাম্মেল হক সার্বক্ষণিক মাঠের প্রস্তুতির কাজ তদারকি করছেন।
সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণের জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ভেতরে ৩৫ হাজার মানুষ একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন। সাড়ে পাঁচ হাজার নারীর জামাতে নামাজ পড়ার ব্যবস্থা থাকছে। জাতীয় ঈদগাহ মাঠে রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রী, সচিবসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ঈদ জামাতে অংশ নেবেন বলে জানা গেছে।
ঈদ জামাতের প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহম্মেদ বলেন, ‘আমরা অনেক আগে থেকেই কার্যক্রম শুরু করেছি। এই মুহুর্তে প্রায় ৯০ শতাংশ কাজই শেষ হয়েছে। আমরা আলাদাভাবে পানি ছিটিয়ে দেখছি যদি বেশি বৃষ্টি হয় তাহলে নিষ্কাশন ব্যবস্থা ঠিক আছে কিনা। বৃহস্পতিবার মেয়রসহ ঈদগাহ ময়দান পরিদর্শন করা হবে।’
সরেজমিনে আরও দেখা যায়, ঈদগাহে প্রবেশের প্রধান গেট দৃষ্টিনন্দনভাবে বড় করে লেখা হয়েছে ঈদ মোবারক। অনেক পথচারীকে ঈদগাহের প্রধান গেটের সামনে সেলফি তুলতে দেখা যায়। কয়েকজন পুলিশ সদস্য বসে আছেন ঈদগাহ গেটের ভেতরে।
জানতে চাইলে এক পুলিশ সদস্য বলেন, এখানে দেশের সাধারণ মানুষের পাশাপাশি ভিভিআইপিরা নামাজ পড়তে আসবেন। মাঠের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য সবসময় এখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা থাকেন।
সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল শাখায় কাজ করা মো. মিঠুন বলেন, জাতীয় ঈদগাহের কাজ দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মাধ্যমে হচ্ছে। আমাদের ৪০-৫০ জন লোক কয়েকদিন ধরেই কাজ করছে। এখানে পানির জন্য ওয়াসা, মাঠের জন্য গণপূর্তসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান জড়িত আছে।
কাজের অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের সিটি করপোরেশনের তথ্য অফিসার সবচেয়ে ভালো বলতে পারবেন। এই মুহুর্তে এইটুকু বলতে পারি প্রায় সবই শেষ। দুটি ছোট ছোট গেট হবে সেগুলো শুধু সেট করব আর চাঁদরাতে মাটির ওপরে বসানোর যে ব্যবস্থা সেটি বিছানো হবে।’
প্যান্ডেলের কাজে নিয়োজিত এক শ্রমিক বলেন, আমি ঠিকাদারের শ্রমিক হিসেবে কাজ করি এখানে। কাজ শেষের দিকে। যা আছে সেগুলো একবারেই সামান্য।
প্রতি বছর ঈদের প্রধান জামাত হয় জাতীয় ঈদগাহে। কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারির কারণে ২০২০ এবং ২০২১ সালে চারটি ঈদের জামাত হয়নি। গত বছর রোজা থেকে পুনরায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হচ্ছে।