প্রকাশ্যে ভোটের মাঠে জাহাঙ্গীরের মা জায়েদা!
সাদাকালো নিউজ
জায়েদা খাতুন। বয়স ৭০ বছর। গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা তিনি। গাজীপুরে নানান ব্যবসায় যখন জাহাঙ্গীর আলমের সুসময় তখন তার মতো তার মা জায়েদা খাতুনও গরিব মানুষদের সাহায্য সহযোগিতা করেছেন। বিপদে পড়া অনেককেই অটোরিকশাও কিনে দিয়েছেন। তবে তিনি কখনও ভোটে দাঁড়াবেন বিষয়টা কল্পনাতেও ছিল না স্থানীয়দের।
২৫ মে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন ঘিরে এখন আলোচিত চরিত্রে পরিণত হয়েছেন জায়েদা খাতুন। জাহাঙ্গীরের মনোনয়ন বাতিল হওয়ার পর তার কর্মী সমর্থকরা এখন মায়ের পাশেই দাঁড়িয়েছেন। গাজীপুর সদরের ছয়দানা এলাকার বাসায় জাহাঙ্গীরের বাড়িতেই থাকেন তার মা।
৬ মে প্রথমবারের মতো সংবাদমাধ্যমের সামনে আসেন জায়েদা। এদিন জাহাঙ্গীরের বাড়িতে ভিড় জমে সাধারণ মানুষদের। সেখানে উপস্থিত থাকা প্রতিবেশীরা জানান, জায়েদার স্বামীর নাম মিজানুর রহমান। বিয়ের ১০ থেকে ১২ বছর পর বড় মেয়ে জারমিন আক্তাকে নিয়ে তারা চলে আসে গাজীপুরের কালীগঞ্জের কানাইয়া এলাকায়। সেখানে এক খণ্ড জমি কিনে বাড়ি করেন তারা। সেখানেই জাহাঙ্গীর ও তার ছোট ভাই আল আমিনের জন্ম হয়।
স্বামী ও মেয়েকে নিয়ে জীবন সংগ্রাম করে চলতে হয়েছে জায়েদা খাতুনকে। ছেলেরা কিছুটা বড় হওয়ার পরে কানাইয়া থেকে তারা যান জায়েদার বড় ভাই শফিকুল আলমের বাসায়। সেখানে থেকেই ছাত্রজীবন শেষ করেন সন্তানরা। অনেক কষ্ট ও দুঃখকে জয় করেই আজকের অবস্থানে পৌঁছেছেন তিনি। আজ তার ছেলেরাও প্রতিষ্ঠিত।
জাহাঙ্গীর মেয়র হওয়ার আগে গাজীপুর সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। এর আগে নানা ধরণের ব্যবসা ছিলো তার। ব্যবসায় নেমেই আর্থিক অবস্থার উন্নতি হয়। সন্তানদের বর্তমান অবস্থানে নিয়ে আসতে জায়েদা খাতুনকে অনেক ত্যাগ, ধৈর্য ও পরিশ্রম করতে রয়েছে। এলাকাবাসীর নানা সমস্যার সময়েও জায়েদা পাশে দাঁড়িয়েছেন।
প্রথমবারের মতো সংবাদ কর্মীদের মুখোমুখি হয়ে জায়েদা খাতুন দাবি করেন, তার ছেলের প্রতি অন্যায় করা হয়েছে। এ কারণেই তিনি ভোটে নেমেছেন। আর সেই অন্যায়ের প্রতিবাদেই সবাই তার পাশে থাকবে এবং তিনি ভোটে জিতবেন।
জায়েদা আরও জানান, নগরের ৫৭টা ওয়ার্ডের মানুষ তাকে কতটা ভালোবাসে সেটা তিনি ভোটের মাধ্যমেই প্রমাণ করতে চান। যদি সুষ্ঠু ভোট হয় তাহলে তিনি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।
জাহাঙ্গীরের বিষয়ে তিনি জানান, নগরের বাসিন্দাদের জন্য তার ছেলে কাজ করে গেছেন। নগরের রাস্তাঘাটেরও অনেক উন্নয়ন হয়েছে। কিছু মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে ষড়যন্ত্র করে তার ছেলেকে বসানো হয়েছে। আর এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করতেই তিনি ভোটের মাঠে নেমেছেন।
এসময় কিছু প্রতিশ্রুতিও দেন জায়েদা খাতুন। তিনি জানান, যদি নির্বাচিত হতে পারেন তাহলে ছেলের যে অসামাপ্ত কাজ গুলো রয়েছে সেগুলো শেষ করবেন। সবার সাথে যোগাযোগ রাখবেন। সবগুলো ওয়ার্ডের মানুষদের নিজের সন্তানের চোখে দেখবেন।
এখন পর্যন্ত অনেকের ধারণা, জাহাঙ্গীর যদি শেষ পর্যন্ত প্রার্থিতা ফিরে না পান, তাহলে তিনি মায়ের পক্ষে সর্বশক্তি নিয়োগ করবেন। তবে আওয়ামী লীগে অবস্থান হারানোর পর নেতাকর্মীদের একটি অংশ পক্ষত্যাগ করায় তিনি মায়ের পক্ষে কতটা সফল হবেন, তা নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন।