গুরুতর আহত অমিতাভ বচ্চন!
সাদাকালো নিউজ
সত্তরের দশকের ‘অ্যাংরি ইয়াং ম্যান’ অমিতাভ বচ্চন। তার ভরাট কণ্ঠ এবং অভিনয়-জাদুতে মুগ্ধ গোটা বিশ্ব। বয়সকে ফুঁ দিয়ে এখনও বলিউডের শাহেনশাহ তিনি। তবে এই মহাতারকার ভক্তদের জন্য রয়েছে দুঃসংবাদ। গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন অমিতাভ বচ্চন।
ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর, হায়দরাবাদের চলছিলো ‘প্রজেক্ট কে’ সিনেমার শুটিং। সে ছবির শুটিংয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন অমিতাভ। নিজের ব্লগে এ দুঃসংবাদ জানিয়েছেন স্বয়ং আমিতাভ বচ্চন। তিনি জানিয়েছেন, তার পাঁজরের কার্টিলেজ ভেঙে গেছে।
ব্লগে অমিতাভ বচ্চন লেখেন, শুটিংয়ে অ্যাকশন শটের সময়, আমি আহত হয়েছি। পাঁজরের কার্টিলেজ ভেঙে গেছে এবং ডান পাঁজরের খাঁচার পেশী ছিঁড়ে গেছে। শুট বাতিল হয়েছে। হায়দরবাদের এআইজি হাসপাতালে চিকিসাধীন আছেন। সেখানে সিটি স্ক্যান করা হয়েছে। বিশ্রামের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
অভিনেতা আরও লেখেন, নড়াচড়া এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের ফলে ব্যাথা হচ্ছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, কিছুটা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে কয়েক সপ্তাহ সময় লাগবে। ব্যথার জন্য কিছু ওষুধও খাচ্ছি। সুতরাং সমস্ত কাজ যা করার কথা ছিল তা স্থগিত করা হয়েছে এবং সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত সবকিছু স্থগিত অথবা বাতিল করা হয়েছে।’
সব শেষে শুভাকাঙ্ক্ষীদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন না বলে দুঃখ প্রকাশ করে অমিতাভ বচ্চন লেখেন, সোমবার রাতে জলসা গেটে শুভাকাঙ্ক্ষীদের সঙ্গে দেখা করতে পারব না। তাই কেউ আসবেন না। যারা আসতে চান তাদের যতটা পারেন জানিয়ে দিন। বাকি সব ঠিক আছে।
এবারই প্রথম নয়। এর আগে, আশির দশকে ‘কুলি’ ছবির শুটিং করতে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছিলেন বিগ বি। আঘাতের পরিমাণ তখন এতটাই ভয়ানক ছিল যে, অনেকেরই ধারণা ছিল আর বুঝি ফেরত আসতে পারবেন না অভিনেতা। সে সময় তাকে ক্লিনিক্যালি প্রয়াত হিসেবে ঘোষণাও প্রায় দিয়ে ফেলা হয়েছিল। যদিও পরবর্তীতে সুস্থ হয়ে ফিরে আসেন তিনি। এবার বয়স ৮০তে আবারও আঘাত পেলেন নন্দিত এই অভিনেতা।
ভারতীয় চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন। উত্তর প্রদেশের এলাহাবাদের এক হিন্দু-শিখ পরিবারে জন্ম নেন তিনি। তার পিতা হরি বংশ রাই বচ্চন একজন নামকরা হিন্দি কবি ছিলেন। তার মা তেজি বচ্চন পাকিস্তানের এক শিখ-পাঞ্জাবী ছিলেন।
১৯৬৯ সালে মাত্র বিশ বছর বয়সে সিনেজগতে আত্মপ্রকাশ করেন অমিতাভ। সাত হিন্দুস্তানি নামের একটি চলচ্চিত্রের মাধ্যমে সাতটি প্রধান চরিত্রের একটিতে তিনি অভিনয় করেছিলেন। ১৯৭০-এর প্রথম দিকে তিনি বলিউড সিনেমা জগতে ‘রাগী যুবক’ হিসেবে জনপ্রিয়তা লাভ করেন এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হয়ে ওঠেন।
কর্মজীবনে তিনটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং বারোটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কারসহ অজস্র গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কার পেয়েছেন অমিতাভ। ফিল্মফেয়ারের শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কারের বিভাগে তিনি সর্বাধিক মনোনয়ন পাওয়ার রেকর্ড করেছেন। অভিনয় ছাড়াও তাকে নেপথ্য গায়ক, চলচ্চিত্র প্রযোজক, টেলিভিশন সঞ্চালক হিসেবেও দেখা গেছে।