দুদকের তলবে হাজির জাহাঙ্গীর
সাদাকালো নিউজ
গাজীপুর সিটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আলোচনায় সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। একের পর এক দুঃসংবাদ শুনতে হচ্ছে তাকে। মনোনয়ন বাতিল, দল থেকে স্থায়ী বহিষ্কার এরপর স্ত্রীর কাছ থেকে বিচ্ছেদের নোটিশ। এখানেই শেষ নয়, কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুদকও তলব করে তাকে।
রোববার ঢাকায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে উপস্থিত হন জাহাঙ্গীর আলম। সেখানে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরও দেন। এসময় নিজেকে নির্দোষও দাবি করেন গাজীপুরের আলোচিত সাবেক এই মেয়র। জানান, সরকার তাকে দুটি প্রকল্পে ৬০০ থেকে ৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছিলো। কিন্তু দুদক ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে তার বিরুদ্ধে সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে। যা কাল্পনিক, মিথ্যা ও বানোয়াট।
জাহাঙ্গীরের দাবি, জনপ্রতিনিধি হিসেবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে তাকে হয়রানি করা হচ্ছে। আর এই কাজগুলো যারা করছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। উল্টো তাকে হয়রানি করা হচ্ছে।
একটি মহল দুদককে তার বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেন জাহাঙ্গীর আলম। তিনি জানান, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রচারণা চলছে। তার মা মেয়রপ্রার্থী এবং তিনি তার সমন্বয়কারী। ২৫ তারিখে ভোট। আর মাত্র দুইদিন রয়েছে নির্বাচনী প্রচারণার। আর এই সময়টাতে দুদক তাকে ডেকেছে।
এর আগে ভুয়া ব্যাংক হিসাবে অবৈধ লেনদেন, বিভিন্ন প্রকল্পে অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে জাহাঙ্গীরকে তলব করে দুদক। সংস্থাটির উপ-পরিচালক আলী আকবরের নেতৃত্বে দুটি আলাদা অনুসন্ধান টিম জাহাঙ্গীরের বিষয়ে অনুসন্ধান করছে।
দুদক সূত্র জানায়, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কয়টি ব্যাংকে কয়টি হিসাব, কার নামে কীভাবে পরিচালিত হয়েছে সেসব তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। তাছাড়া গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে একটি বেসরকারি ব্যাংকে সিটি করপোরেশনের নামে জাহাঙ্গীর আলমের একক স্বাক্ষরে অ্যাকাউন্ট খুলে আড়াই কোটি টাকা দুর্নীতির তথ্যও পেয়েছে দুদক।
নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে মেয়র জাহাঙ্গীরকে ২০২১ সালের ২৫ নভেম্বর সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। সেদিনই তার অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের জন্য ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
এর আগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্যের জেরে সাময়িক বহিষ্কার হন জাহাঙ্গীর আলম। পরে নিজের ভুল স্বীকার করে ক্ষমার আবেদন করলে শর্ত সাপেক্ষে তাকে ক্ষমা করে আওয়ামী লীগ।
তবে এর চার মাস না যেতেই দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন জাহাঙ্গীর। তবে ঋণখেলাপি তার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়। সবশেষ গত ১৫ই মে জাহাঙ্গীরকে স্থায়ী বহিষ্কার করে আওয়ামী লীগ।