তেল রপ্তানিতে রেকর্ড ইরানের
সাদাকালো নিউজ
গত বছরের প্রতিকূলতা কাটিয়ে এখন সুদিন চলছে ইরানি শাসকগোষ্ঠীর। চীনের মধ্যস্থতায় সৌদি আরবের সঙ্গে সমঝোতার বিষয়টিকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বড় ধরনের বিজয় হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। ঠিক সে সময় তেল রপ্তানিতেও চমক দেখাল রাইসি নেতৃত্বাধীন ইরানি শাসকগোষ্ঠী। ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের পর থেকে এবারই দেশটির তেল রপ্তানি সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। দেশটির জ্বালানি তেলমন্ত্রী জাভেদ ওউজি রবিবার (১২ মার্চ) এমনটাই জানিয়েছেন ।
জাভেদ ওউজি আরও জানিয়েছেন, ২০২১-২২-এর তুলনায় ২০২২-২৩ মৌসুমে এখন পর্যন্ত ৮ কোটি ৩০ লাখ ব্যারেল তেল বেশি রপ্তানি করেছে। আর দুই মৌসুম আগের তুলনা করলে ১৯ কোটি ব্যারেল বেশি তেল রপ্তানি করছে যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর সব নিষেধাজ্ঞায় থাকা দেশটি।
গত বছরের তুলনায় ২০২২-২৩ মৌসুমে গ্যাস রপ্তানিও বেড়েছে ১৫ শতাংশ। মূলত চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার ছাপ পড়তে দিচ্ছে না ইরানের তেলের বাজারে। ইরানি তেল ও গ্যাসের প্রধান ক্রেতাই চীন।
শুধু বাণিজ্য কিংবা কূটনীতিই নয়, সামরিক খাতেও এগিয়ে যাওয়ার নতুন পথ পেয়েছে তেহরান। মূলত পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরানকে যুদ্ধবিমান-সংক্রান্ত প্রযুক্তি বা যুদ্ধবিমান বিক্রিতে অনীহা ছিল দেশটির প্রধানতম মিত্র রাশিয়ার।
তবে ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের সময় রাশিয়ার ওপর একচেটিয়া নিষেধাজ্ঞা ও ইউক্রেনকে ন্যাটোর অস্ত্র সরবরাহ মস্কোকে বেপরোয়া সিদ্ধান্তের দিকে ঠেলে দিয়েছে। ইরান এবার চতুর্থ প্রজন্মের সুখোই যুদ্ধবিমান পেতে যাচ্ছে রাশিয়া থেকে।
ইরানের সরকারি সংবাদ সংস্থার বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রচলিত অস্ত্র কেনার ওপর বিধিনিষেধের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তেহরানের কাছে সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে মস্কো। আর সুখোই ৩৫ যুদ্ধবিমান ইরানের জন্য প্রযুক্তিগতভাবে গ্রহণযোগ্য।
এ ছাড়া ইরানের হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার ক্ষেত্রেও রুশ প্রভাব স্পষ্ট।
এমনকি পশ্চিমা গণমাধ্যমে এমনও তথ্য আসছে যে ইউক্রেনে জব্দ করা ন্যাটোর অস্ত্র রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং করার জন্য ইরানে পাঠাচ্ছে রাশিয়া। ইরান ইউক্রেন থেকে পাওয়া মার্কিন অস্ত্র সফলভাবে ‘রিভার্স-ইঞ্জিনিয়ারিং’ করতে পেরেছে কি না তা স্পষ্ট নয়। তবে তেহরান অতীতে জব্দ করা মার্কিন সরঞ্জামের ওপর ভিত্তি করে অস্ত্র তৈরিতে অত্যন্ত পারদর্শী বলে প্রমাণিত হয়েছে।
রানের ভান্ডারে থাকা অন্যতম প্রধান হাতিয়ার ট্যাংকবিধ্বংসী গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র ‘তুফান’, ১৯৭০-এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবহৃত বিজিএম-৭১ টিওডব্লিউ ক্ষেপণাস্ত্র থেকে রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং করেই বানানো হয়েছিল বলে মনে করা হয়।
২০১১ সালে ইরান যুক্তরাষ্ট্রের বানানো লকহিড মার্টিন আরকিউ-১৭০ ‘সেন্টিনেল’ ড্রোন হাতিয়ে নিয়ে সেখান থেকে নতুন একটি ড্রোন বানায়, যা ২০১৮ সালে গুলিতে ভূপাতিত হওয়ার আগে ইসরায়েলের আকাশসীমা পাড়ি দিতে সক্ষম হয়েছিল।