ঢাকা-১৭ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আরাফাত
সাদাকালো নিউজ
ঢাকা-১৭ আসন একটি অভিজাত এলাকা। গুলশান, বনানী, ভাষানটেক থানা ও সেনানিবাস এলাকা নিয়ে গঠিত হওয়ায় এই আসনটি আলাদা একটা গুরুত্ব বহন করে। এই আসনে কে পাচ্ছেন দলীয় মনোনয়ন তা নিয়ে ব্যাপক জল্পনা কল্পনা ছিল নেতাকর্মীদের মনে। অবশেষে মোহাম্মদ আলী আরাফাতের উপরই আস্থা রাখল আওয়ামী লীগ।
৯ জুন রাতে আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভায় মোহাম্মদ আরাফাতের নাম চূড়ান্ত করা হয়। পরে রাত ১০টার পর গণভবনের বাইরে এসে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দলীয় মনোনীত প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন। দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এই সভা হয়।
মোহাম্মদ আলী আরাফাত এতোদিন আওয়ামী লীগের হয়ে নানা বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে যুক্ত ছিলেন। টক শোতে আওয়ামী লীগ ও সরকারের পক্ষে কথা বলেছেন। গেল বছরের ডিসেম্বরে প্রথমবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য হন তিনি। এবার সংসদ সদস্য হওয়ার দৌড়ে শামিল হলেন।
ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচনে বিএনপির কোনো প্রার্থী নেই। এছাড়া স্বতন্ত্র কিংবা অন্য কোনো দলের শক্ত কোনো প্রার্থী নেই এখানে। সে হিসেবে ঢাকা-১৭ উপ-নির্বাচনে আসনটি থেকে ‘এমপি’ হওয়া আরাফাতের জন্য সময়ের ব্যাপার। মোহাম্মদ এ আরাফাত সবচেয়ে বেশি পরিচিত সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান হিসেবে। মূলত এই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমেই বিশ্ব দরবারে পরিচিতি পেয়েছেন তিনি।
এর বাইরে আরও কিছু পরিচয় রয়েছে তার। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি পরিচিত ‘এ আরাফাত’ হিসেবে। কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের স্ট্র্যাটেজিক ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড পলিসি বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। এছাড়া বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও চ্যালেঞ্জ, ট্রানজিট এবং কানেক্টিভিটি, বিদ্যুৎ খাতের জন্য উপযুক্ত নীতি, যুদ্ধাপরাধের বিচার, বাংলাদেশে রাজনৈতিক উন্নয়ন এবং গণতন্ত্র ইত্যাদির মতো বিভিন্ন বিষয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মিডিয়াতে অনেক নিবন্ধ লিখেছেন তিনি। বৈবাহিক জীবনে আরাফাত বিয়ে করেছেন অভিনেত্রী সমী কায়সারকে।
আগামী ১৭ জুলাই ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচন হবে। এই ভোট হবে কাগজের ব্যালটে। গত ১৫ই মে চিত্রনায়ক ফারুক দুনিয়া থেকে বিদায় নিলে আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। এখানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে ২২ জন দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাদের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় নেতা, ব্যবসায়ী, চিত্রনায়কও ছিলেন।
২০০৮ সালে ঢাকা-১৭ আসনে প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন সাবেক সামরিক শাসক ও জাতীয় পার্টির প্রয়াত চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ। মহাজোটের স্বার্থে তাঁকে আসনটি ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় আওয়ামী লীগ। এরশাদ তখন বিএনপি নেতা প্রয়াত হান্নান শাহকে হারিয়ে এই আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
২০১৪ সালে বিএনপির বর্জনের মধ্যে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে এরশাদ পুনরায় এই আসন থেকে মনোনয়ন চান। তবে শেষ মুহূর্তে আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকা না–থাকা নিয়ে নাটকীয়তার মধ্যে তাঁর প্রার্থিতা বাতিল হয়। বিএনএফ নামের একটি অপরিচিত দলের প্রধান আবুল কালাম আজাদ তখন নির্বাচিত হন। সর্বশেষ নির্বাচনে প্রয়াত চিত্রনায়ক ফারুক আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে জয়ী হন। তিনি বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০–দলীয় জোটের প্রার্থী আন্দালিব রহমান পার্থকে পরাজিত করেছিলেন।