ঝাড়ুদার থেকে আইপিএলে পাঁচ বলে ৫ ছক্কার নায়ক
সাদাকালো নিউজ
ভারতের উত্তরপ্রদেশ থেকে উঠে আসা অতিসাধারণ ঘরের ছেলে রিংকু সিং। অভাবের সংসারে নবম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হতে না পারায় পরে আর স্কুলেই যাননি। ব্যয় নির্বাহে ঝাড়ুদারের কাজও করেছেন! অবশ্য কঠিন বাস্তবতার মাঝেও ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্নে কোন ছাড় দেননি কখনও। নিজের স্বপ্ন পূরণে কাজ করে গেছেন। যার অবিশ্বাস্য রূপ দেখা গেলো গতকাল।
গুজরাটের বিপক্ষে জিততে শেষ ওভারে দরকার ২৯ রান। প্রথম বলে সিঙ্গেল নিয়ে রিংকুকে স্ট্রাইক দেন উমেশ যাদব। এরপর জস দয়ালের টানা ৫ বলে ৫ ছক্কা হাঁকিয়ে কেকেআরকে ৩ উইকেটের অভাবনীয় এক জয় এনে দিয়েছেন রিংকু। তিনি ২১ বলে খেলেন ৪৮ রানের ইনিংস। যেখানে ছয়টি ছক্কা ও একটি চার ছিল। ক্রিকেটের ২২ গজে এভাবেই তো তৈরি হয় রূপকথা।
তবে রিংকুর গল্পের শুরুটা কিন্তু একেবারেই মসৃণ ছিল না। ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেট খেলার শখ ছিল রিংকুর। কিন্তু, আর্থিক প্রতিবন্ধকতার কারণে সেই শখ তিনি বুকের মধ্যেই পাথর চাপা দিয়ে রেখেছিলেন।
টানাটানির সংসারে দু’বেলা খাবারের জন্য রিংকুকে ঝাড়ুদারের কাজে লাগিয়েছিলেন তার ভাই। টাকা উপার্জনের জন্য কাজের দরকার ছিল ঠিকই। কিন্তু ঝাড়ুদার হতে চাননি রিংকু।
তবে ক্রিকেটার হতে চাওয়া রিংকু দমে যাননি। তিনি ক্রিকেট খেলা চালিয়ে যান। মাত্র ১৭ বছর বয়সে সুযোগ পেয়ে যান উত্তরপ্রদেশের রাজ্য দলে। লিস্ট এ ম্যাচ খেলেন তার রাজ্যের হয়ে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে আবির্ভাব ২০১৬ সালে।
২০১৭ সালে আইপিএলে ভাগ্য খুলে যায় রিংকুর। ১০ লাখ টাকায় রিংকুকে কিনেছিল কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব। তবে সেবার টুর্নামেন্টে খেলার সুযোগই পাননি তিনি। তাই ব্যাট হাতে তার ক্যামিও দেখার সুযোগ পায়নি ক্রিকেট বিশ্ব।
রিংকুকে কলকাতা নাইট রাইডার্স প্রথম কিনেছিল ২০১৮ সালে, ৮০ লাখ টাকায়। এরপর থেকে কলকাতার নিয়মিত সদস্য তিনি। তবে খেলার সুযোগ খুবই কম পেয়েছেন তিনি। কেকেআর দলে যোগ দেওয়ার পর একাধিক ম্যাচে ফিল্ডিং করতে দেখা গিয়েছে তাকে। দুর্দান্ত সব ক্যাচও ধরেছেন। কিন্তু সেভাবে ম্যাচ খেলতে দেখা যায়নি তাকে। সেই রিংকুই গতকাল ৫ ছক্কা মেরে রাতারাতি ‘নায়ক’ হয়ে উঠলেন।