জাহাঙ্গীরের বিষয়ে হাইকোর্টের ৫ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ আদেশ প্রকাশ!
সাদাকালো নিউজ
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ছে। এখানে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিয়েছে দলের দীর্ঘদিনের ত্যাগী নেতা আজমত উল্লাকে। গেল বারের মনোনয়ন পাওয়া জাহাঙ্গীর আলম এবার মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন। তবে বসে থাকেননি তিনি বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। তবে ঋণখেলাপির অভিযোগে তার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়।
অবশ্য নির্বাচন কমিশনের এমন সিদ্ধান্তের পর হাইকোর্টে রিট করেন জাহাঙ্গীর। সেই রিটও খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সরকার আইন ২০০৯ অনুযায়ী মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার দিন ঋণখেলাপি ছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। এ কারণে তার মনোনয়নপত্র আইন অনুযায়ী বৈধ বলার সুযোগ নেই। এ বিষয়ে পাঁচ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ আদেশও প্রকাশ করা হয়েছে।
লিখিত ওই আদেশে বলা হয়েছে, গেল ২৭ এপ্রিল মনোয়নপত্র জমা দেয়ার দিন সিআইবি রিপোর্টে জাহাঙ্গীর আলমের নাম ছিল। গত দোশরা মে তিনি সিআইবি রিপোর্টের ওপর স্থগিতাদেশ নিয়েছেন।
স্থানীয় সরকার আইনের ৯’এর (২) ধারা তুলে ধরে আদেশে বলা হয়েছে, এই আইন অনুযায়ী জাহাঙ্গীর আলম মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার দিন কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে গৃহীত কোন ঋণ বা কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হন তাহলে তিনি ঋণ খেলাপী বলে গণ্য হবেন।
এর আগে গেল ৮ মে জাহাঙ্গীর আলমের দায়ের করা রিট খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুবুল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এখন পর্যন্ত হাইকোর্টের এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেননি জাহাঙ্গীর।
এদিকে জাহাঙ্গীর আলম নির্বাচন থেকে ছিটকে গেলেও মাঠ রয়েছেন তার মা জায়েদা খাতুন। ‘টেবিল ঘড়ি’ প্রতীক পেয়ে নেমে পরেছেন প্রচারণায়। চষে বেড়াচ্ছেন গাজীপুর শহরের অলিগলি। নির্বাচিত হলে কী কী করবেন সেই প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছেন।
জায়েদা খাতুন জানান, শহরের সবচেয়ে বড় সমস্যা রাস্তাঘাট ও ড্রেনেজ। নির্বাচনে জয়লাভ করলে আগে এই কাজটাই সারবেন। তার লড়াই জনগণের জন্য। আর সেই জনগণ তার সঙ্গে রয়েছে।
নির্বাচনী প্রচারণার সময় মায়ের পাশে থাকছেন ছেলে জাহাঙ্গীর আলমও। জানান, গাজীপুর সিটিকে তিনি গ্রাম থেকে শহরে রুপান্তর করতে চেয়েছিলেন। সেই কাজে হাতও দিয়েছিলেন। এখন মায়ের পাশে থেকে সেই কাজ করে যেতে চান।
তবে, নগরবাসীর কাছে এটা স্পষ্ট যে, নিজের মনোনয়ন বাতিলের আশঙ্কা থেকেই জাহাঙ্গীর আলম তার মাকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের মাঠে এনে দাঁড় করিয়েছেন। দলীয় সমর্থন হারানো ছেলের জনপ্রিয়তা কাজে লাগিয়ে নির্বাচনে তিনি কতটা সফল হবেন এখন সেটাই দেখার বিষয়।