চিকিৎসা ছাড়াই ফিরতে হচ্ছে খুলনা মেডিকেলে আসা রোগীদের
সাদাকালো নিউজ
খুলনায় চিকিৎসকদের কর্মবিরতিতে স্থবির হয়ে পড়েছে চিকিৎসা ব্যবস্থা। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন রোগী ও স্বজনরা। বুধবার (১ মার্চ) সকাল থেকে অনেক রোগী চিকিৎসা না নিয়েই হাসপাতাল থেকে ফিরে গেছেন বাড়িতে।
এদিকে, চিকিৎসকের ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে অনড় অবস্থানে রয়েছেন আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা। হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করা না হলে তারা আরো কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
এর আগে শহিদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. শেখ নিশাত আব্দুল্লাহের ওপর হামলার প্রতিবাদে বুধবার ভোর ৬টা থেকে কর্মবিরতি শুরু করেন চিকিৎসকরা। এই কর্মবিরতি চলবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) ভোর ৬টা পর্যন্ত। তবে মানবিকতার কারণে হাসপাতালগুলোর জরুরি বিভাগ খোলা রয়েছে।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ করতে দেখা গেছে চিকিৎসকদের। সেখানে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) খুলনা শাখার সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলম জানান, হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামি গ্রেপ্তার হলে আমরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করবো।
খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে রূপসা থেকে চিকিৎসা নিতে আসা জুবায়ের বলেন, ‘মাকে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে আসছি। আমার আজ পরীক্ষা ছিলো, ভেবেছি ডাক্তার দেখিয়ে চলে যাব। কিন্ত এসে দেখি যারা সেবা দেবেন তারাই ধর্মঘট ডেকেছে। দেশে মানবিকতা কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে আমার প্রশ্ন এটাই।’
নিরালা থেকে আসা এক রোগী বলেন, ‘কোমরে ব্যাথা। ডাক্তার দেখাতে না পেরে এখন ফিরে যেতে হচ্ছে।‘
গৃহবধূ হালিমা বেগম বলেন, ‘ছেলের পায়ের সমস্যা থাকায় ডাক্তার দেখাতে এসেছি। প্রথম দিন ছেলেকে দেখে ডাক্তার বলেছিলেন অপারেশন করাতে হবে। আজ আবার ডাক্তার দেখাতে এসেছি। কিন্তু ডাক্তাররা কর্মবিরতি পালন করছেন। এখন বাইরে কোনো চেম্বারে ডাক্তার দেখাতে গেলে এক হাজার টাকার মতো খরচ হবে। সেটাতো আমার কাছে নেই। প্রতিদিন আসা একটা সমস্যা। এখন ডাক্তার না দেখিয়ে বাড়ি ফিরে যেতে হচ্ছে।’
প্রসঙ্গত, ভুল চিকিৎসার অভিযোগ এনে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি নগরীর শেখপাড়া এলাকার হক নার্সিং হোমের অপারেশন থিয়েটারে ঢুকে পুলিশের এএসআই নাঈম ও তার সঙ্গীরা ডা. শেখ নিশাত আবদুল্লাহকে মারধর করেন। এছাড়া অপারেশন থিয়েটারে ভাংচুর চালান তারা। এক মাস আগে অপারেশন করা রোগীর জটিলতার কথা বলে তারা এই হামলা চালায়। ডা. নিশাত বর্তমানে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে গত মঙ্গলবার সোনাডাঙ্গা থানায় মামলা দায়ের করেন। এখনো কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।
সোনাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোমতাজুল হক জনান, মামলায় কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।