লোকচক্ষুর আড়ালে আরাভ খান!
সাদাকালো নিউজ
ধরা পড়া শঙ্কার মধ্যেও সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব ছিলেন বহুল আলোচিত রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খান। ফেসবুকে দিতেন অর্থের দম্ভভরা পোস্ট। আসতেন লাইভে। কথা বলতেন গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে। তবে গত পাঁচ দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার সাড়া মিলছে না।
সোমবার সাদাকালো নিউজ একাধিকবার আরাভের ফেসবুকে কল ও বার্তা পাঠালেও উত্তর মেলেনি। এমনকি দেখা যায়নি নতুন কোনো পোস্টও। এ কারণে আরাভের সর্বশেষ অবস্থান নিয়ে তৈরি হয়েছে নানা প্রশ্ন।
এর আগে গত শুক্রবার ইন্টারপোলের ওয়েবসাইটে আরাভের নাম প্রকাশ হয়। এরপর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দুবাই পুলিশ আরাভকে কঠোর নজরদারিতে রেখেছে। তবে তার ধরা পড়ার নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে কূটনৈতিক চ্যানেলে বাংলাদেশ পুলিশ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চেষ্টা চালাচ্ছে বলে পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও দুবাইয়ের একাধিক সূত্র বলছে, ধরা পড়া এড়াতে এক রকম গা ঢাকা দিয়েছেন আরাভ খান। তার ভারতের পাসপোর্ট বাতিল করে দেশে ফেরাতে কাজ করছে পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো।
২৪ মার্চ ইন্টারপোলের ওয়েবসাইটে রেড নোটিশের তালিকায় রবিউল ইসলামের নাম দেখা গেছে। বাংলাদেশের অনুরোধে এই নোটিশ জারি করা হয়েছে। এতে তার ছবি, জন্মস্থান, জন্মতারিখ, বয়স, জাতীয়তা ও অভিযোগের তথ্য রয়েছে।
ইন্টারপোলের রেড নোটিশে আরাভের জাতীয়তা হিসেবে লেখা হয়েছে বাংলাদেশি। এই তালিকায় এখন রবিউলসহ মোট ৬৩ বাংলাদেশির নাম রয়েছে। রবিউল ওরফে আরাভ খান এই তালিকার সর্বশেষ ব্যক্তি।
এদিকে আরাভ খানের নিরুদ্দেশ হওয়ার পেছনে সঠিক কারণ বলতে পারছে না কেউ। সর্বশেষ গেল মঙ্গলবার ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন আরাভ। সেখানে তিনি লেখেন, ‘প্রিয় দেশবাসী আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ যেন সহায় হন।’ এরপর থেকে ফেসবুক ওয়ালে তার কোনো পোস্ট দেখা যায়নি।
দুবাইয়ের সূত্রগুলো বলছে, ধরা পড়ার ভয়ে আছেন আরাভ। দুবাইয়ে তিনি সুনির্দিষ্টভাবে কোথায় আছেন তা জানা যায়নি। তবে আরাভের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, তিনি এখন বাসাতেই অবস্থান করছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ইন্টারপোলের রেড নোটিশ মানে কাউকে ধরার পরোয়ানা নয়। এ ছাড়া ইন্টারপোল অভিযুক্তকে ধরতে কোনো দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে বাধ্য করতে পারে না। এ অবস্থায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় তাকে দেশে ফেরাতে কাজ চলছে।
এদিকে রেড নোটিশ জারির পরও আরাভকে বাংলাদেশে ফেরানো নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। আরাভ যেহেতু ভারতীয় পাসপোর্টধারী, তাই তাকে কিভাবে ফেরানো হবে তা নিয়েও রয়েছে নানা আলোচনা।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চেষ্টা চলছে রবিউলের আরাভ খান নামের ভারতীয় পাসপোর্ট বাতিলের। এটি করা গেলে তাকে দেশে ফেরানো সহজ হবে বলে মনে করেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। এ নিয়ে কূটনৈতিক চ্যানেলেও চলছে যোগাযোগ।