ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ‘সোনার বাংলা’ গড়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক, উন্নত ও সমৃদ্ধ ‘সোনার বাংলা’ এবং ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়তে সরকারের সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ঐতিহাসিক ‘মুজিবনগর দিবসের’ প্রাক্কালে দেওয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাঙালি জাতির জীবনে ১৭ এপ্রিল ‘মুজিবনগর দিবস’ একটি স্মরণীয় দিন।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের এই দিনে তৎকালীন মেহেরপুর মহকুমার বৈদ্যনাথতলার একটি আমবাগানে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী সরকার শপথ নেয়। মেহেরপুর অস্থায়ী সরকারের রাজধানীতে পরিণত হয় এবং সেই দিন থেকে এ স্থানটি পরিচিতি লাভ করে ‘মুজিবনগর’ নামে।
পাকিস্তানি বিমান বাহিনী মুজিবনগর সরকারের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হওয়ার দুই ঘণ্টার মধ্যে মেহেরপুর দখল করে বোমাবর্ষণ ও হামলা চালায় বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
ফলস্বরূপ, অস্থায়ী সরকার ভারতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয় এবং সেখান থেকেই এর কার্যক্রম অব্যাহত থাকে, যোগ করেন তিনি।
বঙ্গবন্ধুকে পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে আটকে রেখে পূর্ব বাংলায় পাকিস্তানিরা নারকীয় হত্যাকাণ্ড ও গণহত্যা অব্যাহত রাখে বলেও জানান শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতাবিরোধী চক্র জাতির পিতা এবং তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যকে হত্যা করে। মহান মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী চার জাতীয় নেতাকে ৩ নভেম্বর জেলের ভেতরে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। তখন ২১ বছর বাংলাদেশে গণতন্ত্র ছিল না।
১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর আমরা জাতির পিতা ও চার জাতীয় নেতার হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় এনেছি, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন যে, ২০০৯ সালে আবার সরকার গঠনের পর ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল’ গঠন করে মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এরপর থেকে গত দেড় দশকে আমরা উন্নয়নের সকল সূচকে অভূতপূর্ব অগ্রগতি অর্জন করেছি।’ আরও উল্লেখ করেন যে, দারিদ্র্যের হার কমে ১৮.৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস বিনাশের জন্য সরকার ‘জিরো টলারেন্স নীতি’ গ্রহণ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৩০ লাখ বীর শহীদের জীবন এবং দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের এই স্বাধীনতা অটুট রাখতে হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক, উন্নত ও সমৃদ্ধ ‘সোনার বাংলা’ গড়তে আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুজিবনগর দিবসের সকল কর্মসূচির সাফল্য কামনা করেন।