ক্ষতিপূরণ কি পাবেন টাইটানের ৫ যাত্রীর স্বজনরা?
সাদাকালো নিউজ
কদিন আগে টাইটান নামের একটি সাবমেরিনে চড়ে আটলান্টিকের তলদেশে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষে দেখতে গিয়ে নিরুদ্দেশ হয়েছিলেন পাঁচ পর্যটক। চার দিন মহাসাগরের তলদেশে ব্যাপক তল্লাশির পর গেল বৃহস্পতিবার উদ্ধারকারীরা সাবমেরিনটি পাওয়ার কথা জানিয়েছে। একিসঙ্গে পাঁচ আরোহীর দুনিয়া ছাড়ার কথাও জানানো হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, ৫ আরোহীর পরিবার কি এখন ক্ষতিপূরণ পাবে? বিষয়টি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এতে বলা হয়েছে, পরপারে যাওয়া অথবা বিপর্যয়ের কোনো দায় নেবে না কর্তৃপক্ষ। আর এমন স্বাক্ষর করেই সাবমেরিন টাইটানে চড়েছিলেন ৫ পর্যটক। তবে এমন চুক্তি করে টাইটানে চড়লেও এখনও ক্ষতিপূরণ পাওয়ার সম্ভাবনা আছে তাদের। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তাদের জটিল কিছু আইনী পথ পাড়ি দিতে হবে। আবার এর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন জটিল সমীকরণ।
আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সব সময় দায় মওকুফের বিষয়গুলো আমলে নেয় না আদালত। তবে কর্তৃপক্ষের যদি গুরুতর অবহেলা বা বিপদের প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে ক্ষতিগ্রস্তরা সম্মতি জানালেও বিচারক সেটা প্রত্যাখ্যান করে রায় দিতে পারেন।
সমুদ্র আইন বিশেষজ্ঞ ম্যাথিউ ডি. শেফার বলেন, যদি কোনো দুর্বলতা গোপন করা হয়, তাহলে প্রাণ হারানোর দায়ে যে চুক্তি হয়েছে, সেটা টিকবে না। আর ক্যালিফোর্নিয়ার আইনজীবী জোসেফ লো বলেন, দায় মওকুফের পরও প্রাণ হারানোদের স্বজনরা ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারেন। তবে বিপর্যয়ের কারণ না জানা পর্যন্ত সেটা প্রযোজ্য হবে কি না সেটা এখনি বলা যাবে না।
১৮ই জুন ওয়াশিংটনের এভারেট কাউন্টিভিত্তিক কোম্পানি ওশানগেটের সোবমেরিন টাইটানে চড়ে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়েছিলেন পাঁচ পর্যটক। তারা হলেন- পাকিস্তানের ধনকুবের শাহজাদা দাউদ, তার ছেলে সুলেমান, যুক্তরাজ্যের ধনকুবের হ্যামিশ হার্ডিং, ফরাসি সাবমার্সিবল পাইলট পল হেনরি ও টাইটানিক অভিযান সংস্থার সিইও স্টকটন রাশ।
আটলান্টিক সাগরের গভীরে ডুব দেয়ার প্রায় দুই ঘণ্টার মাথায় টাইটানের সঙ্গে পানির ওপরে থাকা নিয়ন্ত্রক জাহাজ ‘পোলার প্রিন্সের’ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। চারদিনের শ্বাসরুদ্ধকর তল্লাশি শেষে অবশেষে টাইটানের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে সেটার ভেতরে থাকা পাঁচ যাত্রীর দেহ উদ্ধার করা সম্ভব নাও হতে পারে বলে জানিয়েছে মার্কিন কোস্টগার্ড।
এদিকে ওশানগেটের ক্ষতিপূরণ দেয়ার মতো অর্থ আছে কি নেই তা এখনো জানা যায়নি। তবে প্রতিষ্ঠানটির যদি বিমা করা থাকে, তাহলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো প্রতিষ্ঠানটি থেকে ক্ষতিপূরণ নিতে পারবে। অবহেলার কারণে টাইটানটি যদি নষ্ট হয়, আর এর শক্ত প্রমাণ যদি পাওয়া যায়, তাহলে এর তৈরির পরিকল্পনা, নির্মাণ বা উপাদান তৈরিতে সহায়তাকারী তৃতীয় পক্ষের কাছেও ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো।