কে এই জার্মান তরুণী জেনিফার স্ট্রায়াস ? প্রেমের টানে গোপালগঞ্জে এসে বিয়ে করলেন
সাদাকালো নিউজ
প্রেমের টানে নানা দেশের, নানা সংস্কৃতির অনেকে ছুটে আসছেন বাংলাদেশে। কয়েক বছর ধরে প্রায় খবরের শিরোনাম হচ্ছে এমন ঘটনা। ধুমধাম করে বিয়েও করছেন তারা। চলতি বছরেও এই প্রবণতা শুরু হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে সম্পর্ক এরপর সেই সম্পর্ক গড়াচ্ছে বিয়েতে। এ রকম চিত্র এখন বাংলাদেশে অহরহ। তারি ধারবাহিকতায় এবার প্রেমের টানে গোপালগঞ্জে ছুটে এসেছেন এক জার্মান তরুণী। ভালোবাসার মানুষের সাথে চার হাত এক হয়েছে তার।
জার্মানি ওই তরুণীর নাম জেনিফার স্ট্রায়াস। গেল ১৭ই ফেব্রুয়ারি ঢাকায় এসে পৌঁছান তিনি। সেখানে প্রেমিক চয়ন ইসলাম ও তার স্বজনরা জেনিফারকে স্বাগত জানান। রাতেই জেনিফারকে নিয়ে গোপালগঞ্জ শহরে চলে আসেন তারা। শহরের মডেল স্কুল রোডের চয়নের এক আত্মীয়ের বাড়িতে ওঠেন।
১৯ ফেব্রুয়ারি গোপালগঞ্জের একটি আদালতে এফিডেভিটের মাধ্যমে জেনিফার-চয়ন বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন। এতে হৈই চৈই পড়ে যায় পুরো এলাকায়। অনেকেই বিদেশি নববধূকে দেখতে ভিড় করছেন চয়নের বাড়িতে। ভিন দেশি বধূকে পেয়ে খুশি চয়নের পরিবারও।
চয়নের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার জোতকুরা গ্রামে। তার ইতালিপ্রবাসী বাবা রবিউল ইসলামের সুবাদে ৬ বছর আগে তিনি ইতালিতে যান। এর কিছুদিন পর ইতালি থেকে জার্মানিতে চলে যান চয়ন। প্রায় পাঁচ বছর আগে জার্মান ভাষা শিখতে একটি শিক্ষা কোর্সে ভর্তি হন তিনি। সেখানেই পরিচয় হয় জেনিফারের সঙ্গে। আর পরিচয় থেকেই তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
২০২২ সালের ১০ মার্চ চয়ন বাংলাদেশে চলে আসেন। তবে সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে অটুট থাকে তাদের ভালোবাসার বন্ধন। বিদেশ বিভূঁইয়ে গড়ে ওঠা ভালোবাসার চিরস্থায়ী রূপ দিতে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে জেনিফার ছুটে আসেন বাংলাদেশে।
জানা গেছে, জেনিফার জার্মানির মাধ্যমিক পর্যায়ের ছাত্রী। জার্মানির বাইলেফেল্ড স্টেটে বাবা-মার সঙ্গে বসবাস করেন তিনি। তার বাবার নাম জোসেফ স্ট্রায়াস ও মায়ের নাম এসাবেলা স্ট্রয়াস।
চয়নের মা ঝর্ণা বেগম বলেন, ‘ভাবতেও পারিনি জেনিফার আমাদের সঙ্গে এতো সহজে মানিয়ে নিতে পারবে। বিদেশি বৌমাকে পেয়ে আমরা সবাই খুশি। অল্প সময়েই মধ্যে সে সবাইকে খুব আপন করে নিয়েছে। গ্রামের বাড়িতে আনন্দ-উৎসব করে নববধূকে আমরা বরণ করে নেব।’
অন্যদিকে বাবা জোসেফ স্ট্রায়াস মেয়ের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন। এ বিয়েতে জেনিফারের বাবা-মা সহ পরিবারের সবাই খুব আনন্দিত। জেনিফার বলেন, ‘বাংলাদেশকে আমি ভালোবেসে ফেলেছি। এখানকার পরিবেশ, আতিথিয়েতা ও সবার ভালোবাসা আমাকে মুগ্ধ করেছে। পরিবারের সবাই আমাকে আপন করে নিয়েছে। সবাইকে নিয়ে মিলেমিশে চলতে চাই।’
প্রেমিক চয়ন ইসলাম বলেন, দীর্ঘ ৫ বছরের সম্পর্ক আমাদের। আমি একটি চাকরি করতাম। সেখানে মালিকের সঙ্গে মনোমালিন্য হলে চাকরি ছেড়ে বাংলাদেশে চলে আসি। আমার ভালোবাসার টানে জেনিফার বাংলাদেশে চলে এসেছে। আমরা বিয়ে করেছি। এতে আমার ও জেনিফারের পরিবারের সবাই খুব খুশি। কিছু দিনের মধ্যে জেনিফারের বাবা-মা বাংলাদেশ আসবেন। তখন মহা-ধুমধামে বিয়ের অনুষ্ঠান করার ইচ্ছা রয়েছে।’