
কেন হারলেন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক গোলাপ ?
সাদাকালো নিউজ
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদ আব্দুস সোবহান গোলাপ ছিলেন নৌকার ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত মাদারীপুর-৩ আসনের হেভিওয়েট প্রার্থী। এর আগে ওই আসনে ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। কিন্তু সদ্য অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে হেরেছেন বিপুল ভোটের ব্যবধানে।
জানা গেছে দলীয় কোন্দলে নেতা–কর্মীদের কাছে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলেন এই রাজনীতিবিদ। গত ইউপি নির্বাচনে মনোনয়ন বাণিজ্যসহ বিভিন্ন সময়ে নানা ধরনের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য সমালোচিতও হয়েছেন তিনি।
এমনকি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে কালকিনি ও ডাসার উপজেলার সঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতা–কর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে কেন্দ্রে মনোনয়নের জন্য আবদুস সোবাহান গোলাপের নাম প্রস্তাব পাঠানোই হয়নি। তারপরেও তিনি পেয়েছেন দলীয় মনোনয়ন। এরপরই তৃণমূল নেতা–কর্মীদের বিরোধিতার তোপে পড়েন গোলাপ। এই আসনে নৌকা প্রতীকে গোলাপ পেয়েছেন ৬১ হাজার ৯৭১ ভোট পেয়েছেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি তাহমিনা বেগম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ে ঈগল প্রতীকে ৯৬ হাজার ৬৩৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গোলাপের বিপুল অর্থসম্পদ সংক্রান্ত কিছু প্রতিবেদনের জের ধরে স্থানীয় ভোটারদের মাঝে তাঁর প্রতি নেতিবাচক প্রভাব পড়ে বলে জানা গেছে।
মাদারীপুর-৩ আসনটি মাদারীপুরের সদরের ৫টি ইউনিয়ন, কালকিনি ও ডাসার উপজেলা নিয়ে গঠিত। এ আসনে ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রয়াত সৈয়দ আবুল হোসেনের অনুসারী ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিমের অনুসারীদের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক প্রতিযোগিতায় তখনকার প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী আবদুস সোবাহান মিয়া গোলাপ সবাইকে চমকে দিয়ে নৌকার মনোনয়ন পেয়ে যান এবং বিপুল ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিতও হন। এর পরপর পৌর ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন।
মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ মোল্লা বলেন গত ৩০ নভেম্বর কালকিনিতে নির্বাচনী জনসভা করেন যেখানে যোগ দিতে স্থানীয় আওয়ামী লীগের ১১ জন নেতার নাম প্রস্তাব করা হয় কিন্তু আবদুস সোবহান গোলাপ মাদারীপুরের নেতাদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেন। যার কারণে জেলা আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা অসন্তুষ্ট হয়ে থাকতে পারেন।
নির্বাচনে হারার পরপরই ৯ জানুয়ারি মাদারীপুর প্রেসক্লাবে আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপ সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেন নির্বাচনে ঈগল প্রতীকের প্রার্থী সূক্ষ্ম কারচুপি করে নৌকাকে হারিয়েছে।
একই দিন তাহমিনা বেগমও কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে তিনি বলেন আবদুস সোবহান গোলাপের দুর্নীতির কারণে মাদারীপুর-৩ আসনের জনগণ তাঁকে প্রত্যাখান করেছে।