কেন বাংলাদেশিদের হজের খরচ দ্বিগুণ ?
সাদাকালো নিউজ
করোনা মহামারির দুই বছর পর পূর্ণ কোটায় হজের সুযোগ পেয়েছে বাংলাদেশ। যেখানে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে সর্বনিম্ন প্রায় ৭ লাখ টাকার প্যাকেজ নির্ধারণ করা হয়। যা বিগত বছরের তুলনায় প্রায় দেড় থেকে দুই লাখ টাকা বেশি। এবার কোরবানিসহ খরচ পৌঁছাবে প্রায় ৮ থেকে সাড়ে ৮ লাখ টাকায়।
এ বছর এক লাখ ২৭ হাজার বাংলাদেশি হজ করার সুযোগ পাবেন। কিন্তু মাত্র ৩৮ হাজার আগ্রহী হজযাত্রী নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন। তিন দফায় হাজিদের নিবন্ধনের সময় বাড়ালেও মিলছে না আশানুরূপ ফল। এ অবস্থায় বাড়তি খরচে হজের কোটা পূরণ না হওয়ার শঙ্কা ব্যবসায়ীদের।
হজ এজেন্সি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এবং অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ জানিয়েছে, হজ প্যাকেজের মূল্যবৃদ্ধির অন্যতম প্রধান কারণ হলো অস্বাভাবিক বিমান ভাড়া। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কোনো যৌক্তিক কারণ ছাড়াই অতিরিক্ত মুনাফা করতে ৩০ শতাংশ ভাড়া বাড়িয়েছে। এতে করে গত বছরের তুলনায় এবার সরকারি ও বেসরকারি উভয় হজ ব্যবস্থাপনায় হজ প্যাকেজে খরচ বেড়েছে প্রায় দেড় লাখ টাকা।
তথ্য বলছে, প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তানের হাজিদের তুলনায় বাংলাদেশি হাজিদের খরচ প্রায় দ্বিগুন। পাকিস্তানের ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চলতি বছরের জন্য তাদের আনুমানিক হজ প্যাকেজ হবে প্রায় ১০ লাখ পাকিস্তানি রুপি। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৪ লাখ টাকা।
ভারতের সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ বছর প্রত্যেক হজ যাত্রীর জন্য ১ লাখ রুপি ভর্তুকি দেয়া হবে। সে অনুসারে ভারতীয়দের হজ প্যাকেজ হবে ৩ লাখ রুপি। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৪ লাখ টাকারও কম।
ভারত ও পাকিস্তানের উড়োজাহাজ ভাড়া ১ লাখ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকার মধ্যে। বাংলাদেশ বিমান ও সৌদি আরবের একচেটিয়া ব্যবসা থেকে পরিত্রাণ পেতে এটিএবি ও হাব নেতারা বলছেন, বাজারে প্রতিযোগিতা তৈরির জন্য সরকারের উচিত ভারত, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার এয়ারলাইন্সগুলোকে বাংলাদেশ থেকে হজযাত্রী পরিবহণের অনুমতি দেয়া।
এটিএবির তথ্য অনুযায়ী, গত ৬ বছরে বিমান প্রায় ৭০ শতাংশ ভাড়া বাড়িয়েছে। ২০১৭ সালে ভাড়া ছিল ১ লাখ ১৮ হাজার টাকা, ২০১৮ ও ২০১৯ সালে ছিল ১ লাখ ২৮ হাজার টাকা, ২০২০ সালে ছিল ১ লাখ ৩৮ হাজার টাকা, ২০২২ সালে ছিল ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা। করোনার কারণে ২০২১ সালে বাংলাদেশ থেকে কেউ হজে যাননি। এ বছর বিমান ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ২ লাখ টাকা। গত বছরের চেয়ে এ বছর বিমান ভাড়া বেড়েছে প্রায় ৬০ হাজার টাকা।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী মে মাসের শেষের দিকে শুরু হবে হজ ফ্লাইট। যেখানে বিমান ভাড়া নিয়ন্ত্রণসহ হজ প্যাকেজ পুর্নবিবেচনা করার দাবি সংশ্লিষ্ঠদের।