কার কাছে বিচার চাইবেন নাহিদের স্ত্রী-বাবা-মা?
রাকিবুল ইসলাম
ঢাকার কামরাঙ্গীরচরের স্থায়ী বাসিন্দা নাহিদ হোসেন। ২৩ বছরের এই তরুণ মাত্র ৬ মাস আগেই বিয়ে করেন ডালিয়া নামে এক তরুণীকে। সংসারের হাল ধরতে কাজ করতেন কুরিয়ার সেবাদানকারী এক প্রতিষ্ঠানে ‘ডেলিভারিম্যান’হিসেবে। অন্যদিনের মতো মঙ্গলবার সকালে কাজে যোগ দিতে বেরিয়ে, রাতে বাসায় ফিরলেন নিথর দেহে।
নাহিদের এমন চলে যাওয়া মেনে নিতে পারছেন না কেউ। স্যোশাল মিডিয়ায় উঠেছে নিন্দার ঝড়। আর বিনা দোষে ছেলের এমন চলে যাওয়ায় স্তব্ধ নাহিদের বাবা-মা। সন্তানের জন্য অঝোরে কেঁদে চলেছেন তাঁরা। অন্যদিকে, প্রিয়তম স্বামীকে হারিয়ে অনেকটা পাগলপ্রায় নাহিদের স্ত্রী ডালিয়া।
কামরাঙ্গীরচরের রনি মার্কেটের পাশে দেওয়ানবাড়িতে ছোট্ট একটি ঘরে সুখের সংসার ছিল নাহিদ-ডালিয়া দম্পতির। কিন্তু সেই সংসারে এখন চলছে করুণ আর্তনাদ। সান্ত্বনার সব ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন স্বজন ও প্রতিবেশীরা। তাই কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছে না তাদের কান্না।
জানা গেছে, নাহিদের বাবার নাম নাদিম হাসান। তিনি ম্যাটাডোর ইন্ডাস্ট্রিতে চাকরি করেন। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে নাহিদ সবার বড়। এলিফ্যান্ট রোডের বাটা সিগন্যাল এলাকায় ডি লিংক নামে একটি কুরিয়ার সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানে কাজ করতো নাহিদ। বিয়ের পর কামরাঙ্গীরচরে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন।
পরিবারের ভাষ্য, মঙ্গলবার সকালের দিকে বাসা থেকে বের হয়ে কাজে যায় নাহিদ। এরপর দুপুর থেকে তাঁর ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। বিকেলে ফেসবুকের মাধ্যমে নাহিদের ঘটনা জানতে পারেন স্বজনরা। তাঁরা দ্রুত ছুটে আসেন ঢাকা মেডিকেলে।
ততক্ষণে পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় নাহিদকে নেয়া হয় লাইফ সাপোর্টে। রাত ৯টা ৪০ মিনিটে সবাইকে ছেড়ে চলে যান নাহিদ। এসময় নাহিদের মা, স্ত্রীসহ অন্য আত্মীয়দের চিৎকারে ভারী হয়ে ওঠে হাসপাতাল চত্বর। চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি আশপাশের অনেকে। পরে নাহিদের দেহ নিয়ে যাওয়া হয় কামরাঙ্গীরচরে। সেখানেই তাকে শায়িত করার কথা।