কানাডায় স্ত্রীর নামে বাড়ি ব্যাংকে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা!
সাদাকালো নিউজ
মসজিদ-মন্দির কিংবা শিক্ষাপ্রতিষ্টান এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে অনিয়ম আর দুর্নীতি করেননি নাটোর-২ আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল। এমন অভিযোগ স্থানীয় নেতাকর্মীদের। জানা গেছে, লাগামহীন স্বেচ্ছাচারিতার কারণে এখন নিজ দলেই কোনঠাসা হয়ে পড়েছেন এই সংসদ সদস্য।
গেল বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি জেলা আওয়ামী লীগের পদ হারান শফিকুল ইসলাম শিমুল। নির্বাচনি এলাকার নিজ দলের দুই উপজেলা চেয়ারম্যান ও দুটি পৌর মেয়রসহ বেশিরভাগ জনপ্রতিনিধির সঙ্গেই তার দা-কুমড়া সম্পর্ক। এমনকি জেলা আওয়ামী লীগের সঙ্গেও তার কোনো সম্পর্ক নেই। জেলার সব এমপির অবস্থানও তার বিরুদ্ধে।
দলীয় নেতাকর্মীদের অভিযোগ, নিয়োগ বাণিজ্য করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন শিমুল। আর এই দুর্নীতির টাকায় তিনি নাটোর এবং কানাডার বেগমপাড়ায় স্ত্রীর নামে বিলাসবহুল দুটি বাড়ি করেছেন। এছাড়া দেশ বিদেশের বিভিন্ন ব্যাংকে স্ত্রী, আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিনিধির নামে রেখেছেন বিপুল পরিমাণের টাকা।
জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা জানান, আয়কর ফাইল অনুযায়ী এমপি শিমুলের স্ত্রী শামীমা সুলতানা জান্নাতি একজন গৃহবধূ। কিন্তু তার নামে দেশ-বিদেশে রাজপ্রাসাদসম দুটি বাড়ি রয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে জান্নাতির সম্পদ ছিল ২ কোটি ১৪ লাখ টাকার। পরের বছর তার সম্পদ বৃদ্ধি পায় ১৬ লাখ টাকা। কিন্তু করোনা মহামারির মধ্যে ২০২০-২১ অর্থবছরে তার সম্পদ বেড়েছে ৪ কোটি ২২ লাখ টাকারও বেশি। সম্পদ বৃদ্ধির হার ২৮৪ শতাংশ। যা রীতিমতো বিস্ময়কর। এরিমধ্যে এমপি শিমুলের স্ত্রী জান্নাতির নামে কানাডায় বিলাসবহুল বাড়ির তথ্য জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
দৈনিক যুগান্তরের এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, কানাডার ব্যাংকে এমপি শিমুলের অর্থ লেনদেনের তিনটি অ্যাকাউন্ট আছে। এরমধ্যে তার নিজ নামে দুটি এবং কানাডার একজন নাগরিকের নামে অপরটি। ২০২০ সালের ১৬ই জানুয়ারি পর্যন্ত এসব অ্যাকাউন্টে তার ৪৬ লাখ ৫১ হাজার ১৬২ কানাডিয়ান ডলার জমা ছিলো। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৩১ কোটি ৬২ লাখ টাকা।
১৯৭৬ সালের তেশরা জুলাই জন্মগ্রহণ করেন শফিকুল ইসলাম শিমুল। তার পৈত্রিক বাড়ি নাটোর সদর উপজেলায়। তিনি আইন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন। পেশায় ঠিকাদার ও সরবরাহকারীর কাজের সাথে জড়িত তিনি।
জানা গেছে, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে থাকাকালে শিমুল সদর উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের নির্বাচনে সদর আসন থেকে তিনি প্রথমবার এমপি নির্বাচিত হন। এরপর তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হন।
এমপি শিমুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক থাকাকালে নিজের পরিবারের সদস্যদের আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পদে বসিয়ে দল নিয়ন্ত্রণ করেছেন। বিএনপি-জামায়াতের লোক এনে তিনি হাইব্রিড আওয়ামী লীগ তৈরি করে দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের দূরে ঠেলে দিয়েছেন। আর এসব কারণে জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি ঘোষণা হলে সাধারণ সম্পাদকের পদ হারান তিনি।