এলিজাবেথের জন্য অঝোরে কাঁদলেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সৈনিক
সাদাকালো নিউজ
নাম আব্দুল মান্নান। বয়স ১১৫ বছর। বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলায়। ১৯৪২ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। এখনও যত্ন করে রেখেছেন সে সময়ে পরিহিত তাঁর পোশাক এবং প্রয়োজনীয় নানা কাগজপত্র। ব্রিটিশ রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের কাছ থেকে এখনও সম্মানসূচক ভাতাও পান তিনি।
৮ সেপ্টেম্বর না ফেরার দেশে চলে গেছেন রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ। তাঁর প্রয়াণে অঝোরে কেঁদেছেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের এই সৈনিক। দেশের একটি গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘আমি তাঁর আলাদা একটা ছেলে ছিলাম। আমাকে সে ছেলে হিসেবে দেখভাল করতো। আমার চিঠির উত্তর দিতো। আমার মা-বাপ সবকিছুই ওনি ছিলো। তিনি এখন আর নেই।’
কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, ‘আমার চিঠি হয়তো আর কেউ রিসিভ করবে না। সেই চিঠির উত্তরও আর আসবে না। আমার মনের আশাও পূর্ণ হলো না। ওনি চলে গেলো আমাকে ফেলে। আল্লাহ যেন ওনাকে হেফাজত করে। আমার চোখে এখন কান্না ছাড়া আর কিছুই নেই।’
এর আগে দেশের একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের প্রতিবেদনে উঠে আসে আব্দুল মান্নানের জীবনের গল্প। প্রকাশিত হওয়া সেই প্রতিবেদনে অতীতের কথা স্মৃতিচারণ করেন আব্দুল মান্নান।
তিনি জানান, ১৯৪২ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তাতে সৈনিক হিসেবে অংশ নিতে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। লাইনে থাকা সবাই বুকে ব্রিটিশ সেনাদের থাপ্পড় খেয়ে পড়ে গেলেও শক্ত হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। যা দেখে মুগ্ধ হয়ে যায় সেনা বাছাইয়ে অংশ নেয়া ব্রিটিশ সেনার দল। এরপরই ট্রেনিংয়ের জন্য ডাকা হয় তাঁকে।
পরে এক মাসের মতো ট্রেনিং করেন মান্নান। সেই ট্রেনিংয়ে স্কোর ভালো থাকায় সেখানেই অফিসার হিসেবে প্রমোশন পান তিনি। এছাড়া ট্রেনিংয়ে বিশেষ দক্ষতার জন্য পেয়ে যান ল্যান্সনায়েকের দায়িত্বও। এরপর চলে যান আটলান্টিক মহাসাগরে ভেসে থাকা জাহাজে। জাহাজে ভেসে কলম্বো থেকে পাকিস্তান, হিমালয়সহ পুরো ভারতবর্ষ ঘুরে বেড়াতে হয় তাঁকে।
মিয়ানমারে ক্যাম্প করার পর খবর আসে হিরোশিমায় ঘটে গেছে পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে জঘন্য ঘটনা। এরপরই ইংল্যান্ড ফিরতে শুরু করে ব্রিটিশ অফিসাররা। মান্নানের ভাষায়, হিরোশিমার সেই ঘটনার পর সব থেমে যায়। এরপরই ভারতীয় অফিসারদের হাতে দায়িত্ব অর্পণ করে ইংল্যান্ড ফিরে যান সকল ব্রিটিশ অফিসার।