আরও সম্ভাবনা বাড়ল সিরিয়ার আরব লীগে ফেরার
সাদাকালো নিউজ
সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফায়সাল বিন ফারহান আল-সাউদ এক গুরুত্বপূর্ণ সফরে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে পৌঁছেছেন। সেখানে তিনি সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সঙ্গে একান্তে বৈঠক করবেন। সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর সিরিয়ার আরব লীগে ফেরার সম্ভাবনাকে আরও শক্তিশালী করল বলে উল্লেখ করা হয়েছে আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে।
দামেস্কে পৌঁছার পর এক অনলাইন বিবৃতিতে সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, সিরিয়া সংকটের একটা রাজনৈতিক সমাধান দরকার। সৌদি আরব এ রকম সমাধানের পক্ষে। সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দামেস্ক সফর সেই সদিচ্ছার প্রকাশ।
সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফায়সাল মেকদাদের সৌদি আরব সফরের এক সপ্তাহের মধ্যে প্রিন্স ফায়সাল দামেস্ক সফর করলেন। ২০১১ সালে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ শুরুর পর দুই দেশের এই পর্যায়ের কূটনীতিকদের পরস্পরের দেশে সফর এটাই প্রথম।
এদিকে আরব লীগের নয় সদস্য গত সপ্তাহে সৌদি আরবের জেদ্দায় সিরিয়া ইস্যুতে বিস্তারিত আলোচনা করে। আরব লীগে দেশটিকে ফেরানোই ছিল ওই বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য।
বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, সিরিয়ার সংকট কাটাতে দরকার আরব নেতৃত্ব। বাইরের কোনো শক্তি এ সংকটের সমাধান করতে পারবে না। এ জন্য সিরিয়ার আরব লীগের সদস্যপদ ফিরিয়ে দেওয়া দরকার।
তবে ২২ সদস্যের আরব লীগের কোনো কোনো সদস্য এখন সিরিয়ার আরব লীগে ফেরার বিরোধী বলে জানা গেছে।
সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে শুরুর দিকে অন্য উপসাগরীয় দেশের মতো সৌদি আরবও বাশারবিরোধীদের পক্ষ নেয়। তাদের অস্ত্র ও কূটনৈতিক সহায়তা দেয়।
কিন্তু ইরান ও রাশিয়ার সহায়তায় ২০১৫-১৬ সাল থেকে বাশার বাহিনী ক্রমশ বেহাত হওয়া অঞ্চল উদ্ধার করতে শুরু করে। তখন থেকে উপসাগরীয় দেশগুলোর মধ্যে দামেস্কের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের আগ্রহ দেখা দেয়। সবার আগে ২০১৮ সালে এই পথে পা বাড়ায় সংযুক্ত আরব আমিরাত। এরপর ওমানও একই কাজ করে। এখন সৌদি আরব তা করছে।
দুই এক বছর ধরে শোনা যাচ্ছিল, সৌদি আরব সিরিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করতে যাচ্ছে। তুরস্ক ও সিরিয়ায় গত ফেব্রুয়ারির বিধ্বংসী ভূমিকম্পের পর সৌদি আরব দামেস্কের বিপুল ত্রাণ পাঠায়। ভূমিকম্পের পর আমিরাত ও ওমান সফর করেন স্বয়ং বাশার আল-আসাদ।
এদিকে গত মাসে কয়েক বছর পর সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে চীনের মধ্যস্থতায় কূটনৈতিক স্থাপিত হয়। এ ঘটনা ঘটনা ২০১২ সালে ছিঁড়ে যাওয়া রিয়াদ ও দামেস্কের সম্পর্কে জোড়া লাগাতে সহায়তা করছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
এক দশকের বেশি সময়ের গৃহযুদ্ধে সিরিয়া ৫ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। দেশ ছেড়েছে দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক।
বাশার আল-আসাদ উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করতে পারলে সিরিয়ায় বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে। তবে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত তা সীমিতি থাকবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা।