অবশেষে ধরা পড়লো হিরো আলমের মিথ্যাচার!
সাদাকালো নিউজ
আশরাফুল আলম সাঈদ ওরফে হিরো আলমকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিএমপি, ডিবি) কার্যালয়ে ডেকে মুচলেকা আদায়ের ঘটনায় নতুন মোড়। দেশ-বিদেশের গণমাধ্যম থেকে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হিরো আলমের পক্ষ নিয়ে গত ক’দিন যারা ডিবির পিণ্ডি উদ্ধার করেছেন, তাঁদের জন্য রয়েছে পিলে চমকানো তথ্য।
জানা গেছে, রবীন্দ্রসংগীত চর্চা বন্ধে ডিবি মুচলেকা নিয়েছে, হিরো আলমের এমন দাবি, একেবারেই মিথ্যা। মুচলেকার কোথাও রবীন্দ্রসংগীত চর্চায় বাধা দেয়া তো দূরের কথা, রবীন্দ্রসংগীত শব্দই নেই।
ডিবিতে দেয়া হিরো আলমের মুচলেকা হুবহু পড়ে দেখা যায়, এতে লেখা আছে, ‘আমি আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম এই মর্মে মুচলেকা প্রদান করছি যে, ভবিষ্যতে আমি চলচিত্র বা অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে কোনো অশ্লীল কমেডি, অডিও-ভিডিও গান, সংস্কৃতি বা ভাষার বিকৃতি, কোনো নির্দিষ্ট পেশা বা পোশাকের অবমাননা বা বিকৃতভাবে উপস্থাপন করাসহ মানহানিকর ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করা থেকে বিরত থাকব।
এতে আরও লেখা হয়, ‘আমার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট ও ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম থেকে নিজ দায়িত্বে উপরিউক্ত বিষয়ের সকল ধরনের অডিও-ভিডিও কনটেন্ট সরিয়ে ফেলব বা ব্যক্তি উদ্যোগে সরিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা করব। ভবিষ্যতে আমি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ বা বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে নিষিদ্ধ অপরাধ করব না। এই ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত হলে আমার বিরুদ্ধে যেকোনো ধরনের আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন।’
হিরো আলমের মুচলেকায় এও লেখা রয়ছে যে, ‘যেকোনো সময়, যেকোনো অবস্থায় ডিবি পুলিশের তলব মতে ডিবি কার্যালয়ে হাজির হতে বাধ্য থাকব। ভবিষ্যতে আমি আর এ ধরনের কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করব না মর্মে ডিবি সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ, অর্গানাইজড, ক্রাইম-ইনভেস্টিগেশন টিম, ডিএমপি-ঢাকায় মুচলেকা প্রদান করলাম। আমি সজ্ঞানে, সুস্থ মস্তিষ্কে, বিনা প্ররোচনায় উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে অত্র মুচলেকা প্রদান করলাম।’
এই মুচলেকায় মো. মাহবুব নামের একজনের স্বাক্ষরও রয়েছে।
এদিকে, মুচলেকার কোথাও রবীন্দ্রসংগীত চর্চায় বাঁধা দেয়ার কথা লেখা না থাকলেও, হিরো আলম বিভিন্ন গণমাধ্যমে দাবি করেন যে, গত ২৭ জুলাই পুলিশ তাঁকে ধরে নিয়ে আট ঘণ্টা আটকে রাখে এবং মুচলেকা নেয়।
হিরো আলম আরও অভিযোগ করেন যে, পুলিশ বলেছে, তিনি কুৎসিত। তিনি নায়ক হন কী করে। তাঁর নাম থেকে হিরো বাদ দিতে হবে। এছাড়াও, তাঁর কাছ থেকে মুচলেকা নেয়া হয়েছে যে, তিনি আর রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলসংগীত গাইবেন না।
এরপরই দেশের বাইরে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও হিরো আলমকে নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিবিসি, এএফপিসহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম হিরো আলমকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে- এমন সংবাদ প্রকাশ করে। এরপর থেকেই পুলিশের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানিয়ে বলা হয়, হিরো আলম মিথ্যাচার করছে। একই দাবি করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানও। আর মুচলেকায় থাকা পুরো লেখা সামনে আসায় হিরো আলমের মিথ্যাচারও প্রমাণিত হলো।