মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ি নিয়ে বিপাকে হিরো আলম!
সাদাকালো নিউজ
হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের এক শিক্ষকের কাছ থেকে একটি মাইক্রোবাস উপহার পেয়েছেন ইউটিউব ও ফেসবুকের ভাইরাল তারকা আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম। এরিমধ্যে গাড়িটি তিনি বুঝে পেয়েছেন। সেটিকে রোগী আনা-নেয়ার অ্যাম্বুলেন্স হিসেবে ব্যবহার করবেন বলেও ঘোষণা দিয়েছেন হিরো আলম।
এ পর্যন্ত সব ঠিকঠাক ছিলো। কিন্তু সেই উপহারের গাড়ি নিয়ে একের পর এক বিপদে হিরো আলম। প্রথমত, গাড়িটি আনতে মঙ্গলবার হবিগঞ্জে যাওয়ার পথে শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশ তাকে ২ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করে। এরপর হবিগঞ্জের চুনারুঘাট গিয়ে শিক্ষক মখলিছুর রহমানের কাছ থেকে চাবিসহ গাড়িটি বুঝে পান হিরো আলম। এরপর তার সামনে আসে আরও বড় বিপদ।
জানা গেছে, টয়োটা নোহা ১৯৯৮ মডেলের গাড়িটির ফিটনেস সনদের মেয়াদ শেষ হয়েছে প্রায় ১০ বছর আগে। ওই গাড়ির ট্যাক্সও দেয়া হয়েছে সর্বশেষ ২০১৩ সালে। বর্তমানে ওই গাড়ির বিপরীতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের পাওনা প্রায় পাঁচ লাখ টাকা। ফলে নতুন করে আলোচনায় হিরো আলমের উপহারের গাড়ি।
এদিকে, বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই শিক্ষক মখলিছুর ওই গাড়িটি গত পাঁচ বছর ধরে ব্যবহার করেছেন বলে গণমাধ্যমের কাছে স্বীকার করেছেন। তার দাবি, ‘হিরো আলম কাগজপত্র দেখে এবং সবকিছু জেনেই গাড়িটি নিয়েছেন। তাছাড়া অ্যাম্বুলেন্স হিসাবে ব্যবহার করলে কাগজের প্রয়োজন নেই। দেশে এভাবে হাজার হাজার গাড়ি চলছে।’
এ বিষয়ে হিরো আলমের দাবি, গাড়ি গ্রহণের আগে ফিটনেসের মেয়াদ শেষ হওয়া এবং বিআরটিএর বকেয়া পাওনার বিষয়ে তিনি জানতেন না। পরে গাড়ির কাগজপত্র যাচাই করতে গিয়ে তিনি বিষয়টি বুঝতে পারেন।
এ বিষয়ে হবিগঞ্জ বিআরটিএর সহকারী পরিচালক হাবিবুর রহমান বলেন, ২০১৩ সাল থেকে ওই গাড়ির ট্যাক্স টোকেন ও ফিটনেস সনদ নিয়মিত নবায়ন না করায় প্রায় পাঁচ লাখ টাকার মতো বকেয়া জমে থাকতে পারে। তবে পুরোপুরি হিসাব পেতে হলে ব্যাংক থেকে ওই হিসাব নিতে হবে।
গত পহেলা ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় বগুড়া-৪ ও ৬ আসনের উপনির্বাচন। এই দুই আসনেই একতারা প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন হিরো আলম। এর মধ্যে সদর আসনে বড় ব্যবধানে হেরে তার জামানত বাজেয়াপ্ত হয় এবং বগুড়া-৪ আসনে হারেন মাত্র ৮৩৪ ভোটে।
এই উপনির্বাচনের আগের দিন শিক্ষক মখলেছুর রহমান ফেসবুক লাইভে এসে হিরো আলমকে তার ব্যবহৃত গাড়িটি উপহার দেয়ার ঘোষণা দেন। হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার নরপতি গ্রামের ওই শিক্ষক ফেসবুকে বলেছিলেন, হিরো আলম বগুড়ার মানুষের মন জয় করেছেন। নির্বাচনে ফল যেটাই আসুক, সিলেট বিভাগের পক্ষ থেকে তিনি তার গাড়িটি তাকে উপহার দিতে চান।
প্রথমে গাড়ি উপহারের বিষয়টি হিরো আলম গুরুত্ব না দিলে শিক্ষক মখলেছুর আরেকটি লাইভ করেন। এরপরি তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন হিরো আলম। সেই সূত্র ধরেই মঙ্গলবার উপহারের গাড়ি আনতে চুনারুঘাট যান হিরো আলম। কিন্তু এই গাড়ি নিয়ে তাকে আরও কত বিপদের মুখোমুখি হতে হয়, সেটাই এখন দেখার।