নজরদারিতে আরাভঘনিষ্ঠ দেশের এক ডজন তারকা!
সাদাকালো নিউজ
ফেরারি রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানকে নিয়ে তোলপাড় চলছে বাংলাদেশে। একে একে বের হয়ে আসছে স্বর্ণ ও নারীকাণ্ডসহ তার অজানা অধ্যায়। দুবাইয়ের বুর্জ খলিফায় থাকা আরাভের সাম্রাজ্যে বাংলাদেশ থেকে নারীদের নিয়ে কী করা হয়, সেখানে সেলিব্রেটিরা গিয়ে কী করতেন–প্রকাশ হচ্ছে তাও।
তবে এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে আরাভের বাংলাদেশি সহযোগীরা। পুলিশ কর্মকর্তাকে শেষ করে দেয়ার পর কোনও প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় আরাভ দেশ থেকে বিদেশে পালিয়েছে– হিসাব কষা হচ্ছে তারও। ইতোমধ্যেই নাম এসেছে প্রভাবশালী একজন সাবেক পুলিশ কর্মকর্তাসহ একাধিক সেলিব্রেটির।
পুলিশের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, আরাভের বাংলাদেশে থাকা সব নেটওয়ার্ক খোঁজা হচ্ছে। তালিকা করা হচ্ছে তার দেশি ও বিদেশী সহযোগীদের। এর মধ্যে আরাভের ঘনিষ্ঠ হিসেবে এক ডজনেরও বেশি সেলিব্রেটির নাম এসেছে। এছাড়া দুবাইয়ে যাতায়াতকারী অর্ধশতাধিক শিল্পী ও কলাকুশলীদের নামও আছে তালিকায়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে। তবে তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি।
এদিকে আরাভ দুবাই পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে বলে ২১ মার্চ খবর ছড়িয়ে পড়ে। তা গুঞ্জন নাকি সত্যি, নিশ্চিত করতে পারেনি বাংলাদেশ পুলিশ। তবে এক অনুষ্ঠানে বিষয়টি পরিষ্কার করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। তিনি বলেছেন, আরাভ দুবাইয়ে ধরা পড়েননি। তবে যে কোনো সময় সে ধরা পড়তে পারে।
পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন জানান, আরাভকে ধরতে ইন্টারপোলকে চিঠি দেয়া হয়েছে। সেটি ইন্টারপোল গ্রহণও করেছে এবং তার বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করেছে। তবে এখন পর্যন্ত আরাভের নামে কোনো রেড নোটিশ ইন্টারপোলের ওয়েবসাইটে দেখা যায়নি। এ বিষয়ে পুলিশ সদরের ভাষ্য, রেডনোটিশ ওয়েবসাইটে প্রদর্শনের জন্য ৩-৪ দিন সময় লাগবে।
আরাভকে ধরতে ও দেশে আনা প্রসঙ্গে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখা, পুলিশ সদর দপ্তর এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না আসা পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানায় এসব দপ্তর।
চার বছর আগে ঢাকায় এক পুলিশ কর্মকর্তার জীবন নেয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত হওয়ার পর দেশ থেকে পালিয়ে যান রবিউল ইসলাম। প্রথমে ভারতের কলকাতায় গিয়ে আশ্রয় নেন। এরপর আরাভ খান নামে পাসপোর্ট বানিয়ে দুবাইয়ে চলে যান।
চাকচিক্যে ভরা দেশটিতে এখন বড় স্বর্ণ ব্যবসায়ী আরাভ খান। ১৫ই মার্চ দুবাইয়ের নিউ গোল্ড সুকে জমকালো অনুষ্ঠানে আরাভ জুয়েলার্স নামে একটি গয়নার দোকানের উদ্বোধন করেন তিনি। ওই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের ক্রীড়া ও বিনোদনজগতের অনেক তারকাকে হাজির করে গণমাধ্যমের আলোচনায় উঠে আসেন রবিউল ইসলাম।
পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভারতীয় পাসপোর্ট নিয়ে দুবাইয়ে থাকলেও প্রবাসীদের কাছে তিনি বাংলাদেশি হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। এর মধ্যে ভারতীয় পাসপোর্ট নিয়ে বাংলাদেশেও ঘুরে গেছেন তিনি।
রবিউলের গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায়। তাঁর বাবা একজন ভাঙাড়ি ব্যবসায়ী। কয়েক বছরের মধ্যে তাঁর এত টাকার মালিক বনে যাওয়ায় স্থানীয় লোকজনের মধ্যে বিস্ময় সৃষ্টি করেছে।