নিরাময় কেন্দ্র থেকে উদ্ধার হওয়া কে এই চিত্রনায়ক অভি?
নাফিজা আক্তার
ঢাকাই সিনেমাই মোটামুটি পরিচিত মুখ চিত্রনায়ক অনিক রহমান অভি। জনপ্রিয় অভিনেত্রী সাদিকা পারভীন পপির সঙ্গে ‘সাহসী যোদ্ধা’ নামে একটি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন তিনি। এছাড়া ‘চটপটি ভালোবাসা’, ‘দুষ্টু ছেলে’, ‘ভালোবাসা ডটকম’ ‘সেদিন বৃষ্টি ছিলো’সহ একাধিক চলচ্চিত্রেও দেখা গেছে তাকে।
হঠাৎ করেই চলচ্চিত্র পাড়া থেকে উধাও হয়ে যান এই নায়ক। অনেক যোগাযোগ করেও কোনো খবরই পাওয়া যাচ্ছিলো না তার। ধীরে ধীরে তাকে ভুলেও গেছেন অনেকে। অবশেষে খোঁজ মিললো অভির। সম্প্রতি পিরোজপুরে থাকার সময় চিত্রনায়ক ও শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানের মোবাইলে হঠাৎ একটি ফোন আসে। অপর প্রান্ত থেকে বলা হয়, ‘ভাই আমি অভি, ভাই আমাকে ৯ মাস ধরে আটকে রাখা রেখেছে। উদ্ধার করেন।’
পুরোটাই সিনেমার গল্পের মতো শোনালেও, এমন কাণ্ড সত্যি জানিয়ে জায়েদ খান বলেন, ‘অভির ফোন পেয়ে আমি অবাক হয়ে যাই। কোথা থেকে ফোন দিয়েছিল জানি না। শুধু বলেছিল, তাকে আটকে রেখে শারীরিককাণ্ড ঘটিয়েছেন এক নারী। তার সঙ্গে নাকি আরও অনেককেই সেখানে আটকে রাখা হয়েছিলো।’
পরে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সমিতির পক্ষ থেকে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) কাছে এ বিষয়ে প্রথমে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়। এরপর ৪ জানুয়ারি গাজীপুর নগরীর ভাওয়াল না-সেবনদ্রব্য পুনর্বাসন কেন্দ্রে অভিযান চালিয়ে অভিসহ ২০ জনকে উদ্ধার করে র্যাব। এসময় প্রতিষ্ঠানটির মালিক ফিরোজা নাজনীনসহ পাঁচজনকে আটক করা হয়।
পরে র্যাব জানায়, অভি না-সেবনদ্রব্যে আসক্ত থাকায় তাকে ওই নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়। র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, ‘চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে একজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাকেও মেডিকেল টেস্টের জন্য পাঠানো হয়েছে। কিসের জন্য তাকে আটকে রাখা হয়েছিল, আমরা সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।’
সূত্র বলছে, অল্প বয়সেই ৯টি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে ঢাকাই চলচ্চিত্রের অভিনেতা অনিক রহমান অভির। অভিনয়ের পাশাপাশি তার ছিলো রেস্টুরেন্টের ব্যবসাও। মহামারি চলাকালীন সময়ে সিনেমা মুক্তি না পাওয়া এবং ব্যবসায় মন্দার কারণে অর্থনৈতিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হন অভি। এ কারণে তিনি ঘুমের ওষুধ সেবন করতেন নিয়মিত। এসময় অভির পরিবারের সদস্যরা ধারণা করেন তিনি না-সেবনদ্রব্যে আসক্ত। তাই অভিকে ওই নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়।
কিন্তু ওই কেন্দ্রে অভিকে নারীদের সঙ্গে শারীরিককাণ্ডে বাধ্য করা হতো। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগও করতে দেয়া হতো না। সবশেষ ওই কেন্দ্রের এক রোগীর আত্মীয়ের ফোন থেকে নিজের দুরবস্থার বর্ণনা দেন শিল্পী সমিতিতে। এরপরই র্যাবের অভিযানে উদ্ধার হন অভি।
